নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণার পরপরই তিন শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে গ্লোবাল ব্যাংকিং জায়ান্ট এইচএসবিসি। এরই মধ্যে কর্মীদের সঙ্গে একে একে বৈঠক করে বাধ্যতামূলক অবসরের শর্তে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিচ্ছে ব্যাংকটি। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই গ্রুপ-ওয়াইড এক ই-মেইলে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে রিটেইল ব্যাংকিং বন্ধের ঘোষণা আসে। সেদিন ভোরেই স্থানীয় কর্মীরা খবর পান। এরপর সিইও মাহবুব উর রহমানের নেতৃত্বে একটি টাউনহল মিটিং অনুষ্ঠিত হলেও সেখান থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানানো হয়নি। বরং কর্মীদের মধ্যে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
অভিযোগ উঠেছে, প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ অতীতে সীমিত পরিসরে ছাঁটাইয়ের সময় দেওয়া সুবিধার তুলনায়ও কম। অনেক কর্মকর্তা বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন, চাকরি হারালে সেই ঋণ কীভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
এক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিল। আগে থেকেই ছাঁটাইয়ের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হওয়ায় অন্য কোথাও চাকরির সুযোগও কমে গেছে।
২০১১-১২ সালে ১০০ কর্মকর্তা ছাঁটাইয়ের সময় এইচএসবিসি দুটি বিকল্প দিয়েছিলÑঅন্য বিভাগে চাকরির সুযোগ অথবা পাঁচ বছরের বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় রিটেইল ব্যাংকিং বন্ধ করার সময় কর্মকর্তাদের সাত বছরের প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে চার বছরের সমপরিমাণ বেতন ও তিন বছরের চাকরির নিশ্চয়তা ছিল। অথচ বাংলাদেশে এখন শ্রম আইনে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে।
কর্মীদের অভিযোগ, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা চরম উদাসীনতা ও অপেশাদারিত্ব দেখাচ্ছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নির্ধারণে বাংলাদেশে ব্যাংকের সিএফও জিগনেস চেতন রুপারেল, সিআরও চন্দ বাল গোস্বামী এবং সিওও দেভেশ মাথুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পুরো কার্যক্রমের তদারকি হচ্ছে ভারতের সিইও হিতেন্দ দেভের কাছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি গ্লোবাল ব্যাংকের মানদণ্ডের তুলনায় এই প্রস্তাব অস্বাভাবিকভাবে কম এবং এর পেছনে স্থানীয় ব্যবস্থাপনার ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে।

Discussion about this post