Print Date & Time : 15 August 2025 Friday 4:57 am

ওরিয়ন চেয়ারম্যানের ভাই রেজাউলের ব্যাংক হিসাব সচল

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের ভাই রেজাউল করিমের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ থেকে পুনরায় সচল করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ)। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের গতকাল বৃহস্পতিবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন পূর্ববর্তী শাসনামলের লুটেরাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সচেষ্ট, তখন বিএফআইইউ প্রধান  এ এফ এম শাহিনুল ইসলাম যেন বিপরীত পথে হাঁটছেন।

বিগত রেজিমের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়ার পরিবর্তে, তিনি ধারাবাহিকভাবে তাদেরকে সুবিধা প্রদান করেছেন, যা আর্থিক ব্যবস্থায় সততা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

শাহিনুল ইসলামের এ ধরনের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি হলো, রেজাউল করিমের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ অবস্থা থেকে সচল করার সিদ্ধান্ত। রেজাউল করিম হলেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের ভাই, যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক সুবিধাভোগী ছিলেন। রেজাউল করিমের এই অ্যাকাউন্টে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা ছিল।

দেশের প্রধান অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল, যার মধ্যে ওরিয়ন গ্রুপকে ১১টি অনিয়মের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।  টাস্কফোর্স ওরিয়ন গ্রুপের মালিকদের- ওবায়দুল করিম, তার ভাই রেজাউল করিম এবং এবাদুল করিম বুলবুল (যিনি আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন) এর সঙ্গে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টগুলো ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছিল।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সব ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট, পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করেছিল।

পরবর্তী সময় রেজাউল করিমের একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, তার আবেদনটি পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। তবে কমিটির সুপারিশ না নিয়েই বিএফআইইউ প্রধান শাহিনুল, রেজাউল করিমের অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর থেকে লেনদেনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।

তার এই পদক্ষেপ টাস্কফোর্সের কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক- এ ধরনের একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত অর্থ পাচার মোকাবিলা এবং আর্থিক ব্যবস্থার সততা পুনরুদ্ধারে বিএফআইইউ’র দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি করে।

বিএফআইইউ’র প্রধান হিসেবে শাহিনুল ইসলামের আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং অবৈধ উপায়ে সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তার এহেন কর্মকাণ্ড জবাবদিহির প্রতি উদ্বেগজনক অবহেলা এবং তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।’

জুলকার নাইন সায়েরের ওই পোস্টে প্রমাণস্বরূপ বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকের কাছে পাঠানো একটি চিঠির ছবি তুলে ধরা হয়। চিঠিটি গত ২৫ মার্চ ইস্যু করা হয়।