Print Date & Time : 22 September 2025 Monday 11:44 pm

কারাগার থেকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে সেই মা ও শিশু

প্রতিনিধি খুলনা : কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মা শাহজাদী ও তার ১২ দিন বয়সী শিশু মেয়েকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাদের দুইজনকে হাসপাতালে পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ সেখানে পৃথক কেবিনে রেখে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে সোমবার সকালে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মা শাহজাদী এবং তার মা নার্গিস বেগমের জামিন আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক আনিসুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করেন।

খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, শিশুটির বয়স মাত্র ১২ দিন। কারাগারে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া শিশুটির মা শাহজাদী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে রোববার রাতেই তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার সকালের মধ্যে আদালতের আদেশের অনুলিপি তুলতে পারলে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে। মূলত মানবপাচারের মামলায় নিম্ন আদালতে জামিনের এখতিয়ার নেই। মঙ্গলবার মহানগর আদালতে বাদীর আবেদনও তুলে ধরা হবে। আশা করা যাচ্ছে জামিন হয়ে যাবে।

মায়ের সঙ্গে কারাগারে যেতে হলো ১১ দিনের শিশুকে, হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার এর আগে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে কারাগারে যেতে হয়। দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে গ্রেপ্তার শাহজাদীকে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে উত্থাপন করা হয়। আদালতে শাহজাদীর পক্ষে কেউ জামিন আবেদন করেননি। ছিলেন না কোনো আইনজীবী। তাই কোনো শুনানিও হয়নি। আদালত শাহজাদীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাইরে শিশুটিকে দেখাশোনা করার কেউ না থাকায় শাহজাদীর সঙ্গে তাকেও খুলনা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগরীর রূপসা এলাকার একটি হাসপাতালে বাগেরহাটের রামপালের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ফকিরহাটের মেয়ে শাহাজাদীর (৩৬) কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে কন্যা সন্তান। তাদের ঘরে আগে চার কন্যা সন্তান আছে। এবার ছেলে হবে, এমন প্রত্যাশা ছিলো স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। ছেলে না হওয়ায় স্ত্রীকে হাসপাতালেই ফেলে চলে যান বাবা সিরাজুল। এরপর আর খবর নেননি। পরিবারের চাপ ও হতাশার মধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর ঘটে অঘটন। একই হাসপাতাল থেকে আরেক প্রসূতির চার দিন বয়সী নবজাতক ছেলে চুরি হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধারও করা হয়। শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমের (৫৫) কাছ থেকে চুরি হওয়া নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। তখন আটক হন তিনি।

এ ঘটনায় শাহজাদী ও তার মাকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়। ঐ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৬ দিন ধরে তিনি কারাগারে রয়েছেন। শাহজাদী একটি কক্ষে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। পুলিশের কাছে নার্গিস বেগম দাবি করেন, মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি এমনটা করেছিলেন।

এস এস