প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সৈয়দুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এ রায় দেন। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় সাত আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকি ছয়জন পলাতক ছিলেন। এ মামলার আসামি আব্দুল্লাহ ইহাদ কম বয়সী হওয়ায় তার অভিযোগ শিশু ও কিশোর আদালতে বিচারাধীন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই আত্মীয়স্বজন। তারা হলেন করিমগঞ্জ উপজেলার দেওপুর কাজিহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুর রউফ, আজিজুল হক, মো. আলাউদ্দিন, মো. কালাম মুন্সি ও আয়তুল হক মালাম, আব্দুর রউফের ছেলে হায়দার আলী ও আঙ্গুর মিয়া, আলাউদ্দিনের ছেলে রোয়েল, আজিজুল হকের ছেলে রেজা মিয়া ও রিয়াদ, আলাউদ্দিনের ছেলে রাসেল ও সোহেল, মৃত কাইয়ুমের ছেলে জহিরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) জালাল উদ্দিন রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, উপজেলার নিয়াতপুর ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দুর রহমান পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির জায়গা ও সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল আসামিদের। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ সকালে আসামিরা বাড়ির সীমানায় গাছের চারা রোপণ করলে সৈয়দুর রহমান ও তার ভাতিজা ইজাজুল প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জেরে ওইদিন রাত ৯টার দিকে ইজাজুল নিয়ামতপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে গেলে সেখানে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় স্থানীয়রা ইজাজুলকে উদ্ধার করে ঘটনাস্থলের পাশে সুলতু মিয়ার ফার্মেসিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। খবর পেয়ে ওই ফার্মেসিতে ইজাজকে দেখতে যান সৈয়দুর রহমান। সেখানে তার ওপর হামলা চালায় আসামিরা। ফার্মেসি থেকে রাস্তায় ধরে এনে বুকে ছুরিকাঘাতসহ নির্মম নির্যাতন চালায়। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৯ মার্চ মারা যান। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৫ মার্চ নিহত সৈয়দুর রহমানের বড় বোন পারভিন সুলতানা বাদী হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে জখম করার অভিযোগ এনে করিমগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

Discussion about this post