Print Date & Time : 26 August 2025 Tuesday 3:12 pm

কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অভিযোগ ব্যবসায়ীদের চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট

স্বরূপ ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম : দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে কনটেইনার জট দেখা দিয়েছে। কনটেইনার আসার তুলনায় খালাসের হার না বাড়ায় এ সংকট ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। বন্দরের ধারণক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। দ্রুত কনটেইনার খালাস না হলে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বন্দরের হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংকট নিরসনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নির্দেশ দিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) বা অফডকগামী কনটেইনার অবশ্যই খালাসের দিনেই সংশ্লিষ্ট ডিপোতে পাঠাতে হবে। কোনো চালানের সব কনটেইনার একই দিনে সরানো না গেলে তা পরের দিনই স্থানান্তর করতে হবে। গত ১৪ আগস্ট এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (শুল্ক, রপ্তানি নীতি ও বন্ড) মো. আল আমিন এ নির্দেশনা জারি করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে দীর্ঘদিন ধরে ৬৫ ধরনের আমদানিপণ্য বেসরকারি আইসিডিতে স্থানান্তরের সুযোগ রয়েছে। তবে এবার প্রথমবারের মতো একদিনের মধ্যে সরানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হলো।
এদিকে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ, এ সংকট কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে বন্দরের দায়িত্ব হস্তান্তরের তোড়জোড় শুরুর পর থেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে নানা সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। শ্রমিক আন্দোলন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের আন্দোলন, পরিবহন সংকটসহ বিভিন্ন অজুহাতে জট তৈরি করে ব্যবসায়ী মহলে অসন্তোষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে একটি চক্র।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড ও টার্মিনালে ২০ ফুট একক কনটেইনার রাখার ক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮টি। এর বিপরীতে মঙ্গলবার সকালে বন্দরে জমে ছিল ৪৮ হাজার ৭৫১টি কনটেইনার। সোমবার ছিল ৪৮ হাজার ৪৯৪টি এবং রোববার ছিল ৪৯ হাজার ১৩১টি। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বন্দরে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার কনটেইনার থাকাকেই গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি কার্যক্রম এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সচিব আরও বলেন, খালি কনটেইনার জমে থাকায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বন্দরে ১০ হাজারের বেশি নিলামযোগ্য কনটেইনার ও প্রায় ৩০০ পচনশীল পণ্যভর্তি কনটেইনার পড়ে আছে। এগুলো সরানো হলে বন্দরের প্রায় ২০ শতাংশ জায়গা খালি হবে, যেখানে নতুন কনটেইনার রাখা সম্ভব।
বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, কাস্টমসের কর্মবিরতি, কলমবিরতি এবং ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে যে জট তৈরি হয়েছিল তার প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। ছুটির দিনগুলোয় খালাস কম হওয়ায় এ সমস্যা আরও বেড়েছে।