Print Date & Time : 15 November 2025 Saturday 11:39 pm

গাঁও গেরামের নেতা মো. শাহজাহান

আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী : রাজনীতির পিচ্ছিল পথে বহু ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে গেছেন নিরবে, নিবৃতে। শিকার হয়েছেন অসংখ্য হামলা-মামলার। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রোষানলে পড়ে একাধিকবার কারাবরণও করেছেন।

কথা আর কাজে এক। গাঁও-গেরামের সবার নেতা। এক কথায় তিনি গণমানুষের প্রিয় নেতা মো. শাহজাহান। আপাদমস্তক রাজনীতিক। সভ্য, ভদ্র, শান্ত, অহিংস ও শিষ্টাচারে পরিপূর্ণ এক মানুষ। চলনে-বলনে পুরোদস্তুর সাংগঠনিক কর্মকান্ডের আঁধার।

জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে কথা বলেন অনবরত, সত্য ও স্পষ্ট ভাষায়। গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের প্রেরণাদায়ক রাজনীতিক তিনি। নোয়াখালীর বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অভিব্যক্তি। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের ভাষায়, নোয়াখালীর রাজনীতির অঙ্গনের অবিসংবাদিত রাজনীতিক মো. শাহজাহান। কর্মীদের চোখে সাংগঠনিক দক্ষতা, বিচক্ষণতা, প্রাজ্ঞতা, মেধা আর কর্মময় অবয়বের একনিষ্ঠ অধ্যায়ে পরিস্ফূটিত তাদের নেতা।

জেলার রাজনৈতিকবোদ্ধাদের ভাষায়, মো. শাহজাহান সততায় নিষ্ঠাবান। চরিত্রে পরিচ্ছন্ন। সাধারণ মানুষের জীবন পরিক্রমায় এক মিশুক প্রকৃতির শান্ত স্বভাব তার। সদর বিএনপির সাংগঠনিক রাজনৈতিক ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংগ্রাম ও বিচক্ষণতায় পথ ধরে এ মানুষটি বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান। নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও চট্রগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন শেষে জাতীয় পরিসরে যুগ্ম মহাসচিব পদেও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন।

দলের নেতাকর্মীরা আশা প্রকাশ করে বলেন, সাংগঠনিক, গণতান্ত্রিক, গঠনতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রভাবে হয়তোবা বিএনপির স্থায়ী কমিটিতেও সহসাই নাম উঠবে তার।

বিএনপি কর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, মো. শাহজাহান দীর্ঘকাল নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করে এ জনপদকে বিএনপির ঘাঁটিতে পরিণত করেছেন। বর্তমান নোয়াখালী জেলা বিএনপির দায়িত্বশীলদের প্রায়ই তার রাজনৈতিক সৃষ্ট নেতা, কর্মী বলা যায়।

২০০১ সালের নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদের একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। ছিলেন জাতীয় সংসদেও অন্যতম হুইপও। কিন্তু, ক্ষমতার দৌরাত্ম্য তাকে কোনকালেই অমানুষ করেনি। আচার-আচরণে শিষ্টাচারিতা হারাননি তিনি। নোয়াখালী সদর ও সুবর্ণচরে সংসদ সদস্য পদে তার দায়িত্বকালীন সময়ে বিরোধী শক্তিও অহেতুক কোন মামলা, হামলা কিংবা প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন এমন কথা কেউ বলতে পারবেনা।

মো. শাহজাহানের ব্যক্তিগত জীবনী বলতে গিয়ে বিএনপির এক কর্মী বলেন, একনাগাড়ে মানুষের সঙ্গে আপাদমস্তক ভালবাসায় সিক্ত মো. শাহজাহানের পুরোটা জীবন। রাজনীতির চিরাচরিত ধরণ পাল্টে এ সমাজে অনেকেই জনপ্রতিনিধির খাতায় নাম উঠিয়েছেন। কিন্তু, কজনই-বা সাধারণ মানুষ দুরে থাক, কর্মীর সঙ্গে ভাল আচরণ করেছেন!
সর্বসাধারণের জন্যে ক’জনারই-বা বাসগৃহের সদর দরজা সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। রাজনীতির সমৃদ্ধময় জীবনে কোন নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক তার ভালবাসা বঞ্চিত হয়েছেন এমনটা খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

বিএনপির আরেক কর্মী বলেন, মো. শাহজাহান সংসদ সদস্য পদে দায়িত্বকালীন সময়ে সদর ও সুবর্ণচরের অনেকেরই সরকারি চাকরি হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসনের কর্মরত এমন কোনো ব্যক্তির স্বাক্ষ্য পাওয়া যাবেনা; তিনি কারো কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন।
ওই কর্মী শতভাগ চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেন, শুধু তাই নয়, তার সময়ে দলীয় কোন আচার-অনুষ্ঠান আয়োজনের নামেও কোন সরকারি দপ্তর থেকে নুন্যতম কোনো সুবিধা নিয়েছেন এমন নজির নেই।

মো. শাহজাহান ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে সদর ও সুবর্ণচরের গণমানুষের সুখ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সহযাত্রায় নিজেকে অংশীদার করেন। এক সময়ের ভাঙ্গাচুরা সেই মেঠোপথ সোনাপুর হতে হাতিয়া ঘাট, সোনাপুর হতে আক্তার মিয়ার হাট, মাইজদী হতে নোয়াহাট, দত্তবাড়ির মোড় হতে ওদার হাট পাকাকরণে নিজের অবদান অবিস্মরনীয় করে রেখেছেন ভুক্তভোগীদের কাছে।

২০০১ সালে বিএনপির সরকারের সময় সেসব সড়কে বিদ্যুতায়নের কথা সচেতন সমাজের অনেকের মুখে আজো উচ্চারিত হয়। নোয়াখালীর দস্যুকবলিত জনপদের দস্যুদের শৃঙ্খলিত করে অশান্তির জনপদকে শান্তি, শৃঙ্খলা ও বসবাসের পূণ্যভূমিতে রূপান্তর করেন তিনি।

জেলা শহরের নাগরিকদের জন্যে পৌরব্যবস্থাপনায় বিশুদ্ধ পানির জলাধার স্থাপন, শিল্পকলা একাডেমি ভবন, জেলা জজকোর্ট ভবনের উন্নয়ন, মা ও শিশু হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, সুবর্ণচর উপজেলা কমপ্লেক্স, চরজব্বর থানা ভবন, শতশত কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো রেজিষ্ট্রার্ডসহ গাঁও গেরামে কমিউনিটি ক্লিনিক, সবই তার সময়ের উন্নয়ন।

শিক্ষানুরাগী মো. শাহজাহানের সময়ে সদর ও সুবর্ণচরে একাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, চরমটুয়া ও চরজব্বর কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। তার আন্তরিক চেষ্টায় নোয়াখালী সরকারি কলেজ পুরানো ক্যাম্পাস ছেড়ে অনার্স, মাস্টার্স নিয়ে নতুন ক্যাম্পাস পেয়েছে। এক কথায় নাগরিক জীবনের সঙ্গে মিশে আছেন মো. শাহজাহান। সদর ও সুবর্ণচরবাসীর প্রাণের যেন মহাপ্রাণ তিনি।