শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গণহত্যায় ইসরায়েলের সঙ্গে কারা জড়িত, তা স্পষ্ট করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। খবর আনাদোলু।
তিনি বলেন, গাজার এ গণহত্যা নিয়ে যারা নীরব আছে তারাই এর সঙ্গে জড়িত। এ কথার মাধ্যমে তিনি আরবদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
এছাড়া তুরস্ক আজ নিজের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে,নিজের প্রযুক্তিতে বিশ্বে পরিচিত হয়ে উঠছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা (আইডিইএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এরদোয়ান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই মেলা শুধু তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতি নয়, বরং একটি জাতির নিজস্ব সক্ষমতায় দাঁড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে উত্থানের প্রতিচ্ছবি।
তিনি বলেন, আজ আমরা শুধু একটি প্রতিরক্ষা খাতের উন্নয়ন দেখছি না, বরং একটি জাতির স্বাধীনতার পথে অগ্রযাত্রা, নিজের আকাশে ডানা মেলে উড়ার গল্প দেখছি।
এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক চাপ ও দ্বিমুখী নীতি বা দ্বিচারিতা অতিক্রম করে আজ বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা খাতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।
তার ভাষায়, ১৯৬০-এর দশকে সাইপ্রাস সংকটের সময় ও ১৯৯০-এর দশকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে তথাকথিত মিত্র দেশগুলো থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা পায়নি তুরস্ক।
১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসে শান্তি অভিযান চালানোর পর আমাদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
এরদোয়ান স্মরণ করেন, আমরা যুদ্ধবিমান মেরামতের জন্য বিদেশে পাঠালে সেগুলো আটকে রাখা হয়েছিল। এমনকি হ্যাঙ্গারে রাখার জন্য আমাদের কাছ থেকে ভাড়াও নেওয়া হতো। সাধারণ রেডিওর মতো মৌলিক যোগাযোগ যন্ত্রও আমাদের সরবরাহ করা হয়নি।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের সঙ্গে উত্তেজনার সময়েও পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিশ্রুতি মানেনি বলেও অভিযোগ করেন এরদোয়ান।
তিনি বলেন, আমরা যখন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে উদ্যোগ নেই, তখন বারবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি একসময় আমাদের আকাশসীমা নিয়মিতভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছিল, আর সেই সময়েই আমাদের দেশ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
এই অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে তুরস্ক নিজস্ব প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ জোরদার করেছে এবং মানবিক ও সক্রিয় পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।
তিনি বলেন, তুরস্ক আজ নিজের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে, নিজের প্রযুক্তিতে বিশ্বে পরিচিত হয়ে উঠছে।
তবে এরদোয়ান তার বক্তব্যে সবচেয়ে জোরালো বার্তা দেন গাজায় চলমান যুদ্ধ ও সেখানে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা নিয়ে চুপ থাকা মানেই সেই অপরাধে জড়িত থাকা।

Discussion about this post