শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৪০ হাজারেরও বেশি শিশুকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। খবর: এএফপি।
বুধবার সংস্থাটি ও তার অংশীদাররা গত ৯ নভেম্বর শুরু হওয়া অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ের প্রথম আট দিনে তিন বছরের কম বয়সী ১০ হাজারের বেশি শিশুকে এরই মধ্যে টিকা দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, এই কর্মসূচির প্রথম পর্যায় শনিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, এই টিকা শিশুদের হাম, মাম্পস, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, ধনুস্টংকার, হুপিং কাশি, হেপাটাইটিস বি, যক্ষ্মা, পোলিও, রোটাভাইরাস ও নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করবে।
ইউনিসেফ, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং হামাস নিয়ন্ত্রণাধীন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় পরিচালিত এই অভিযানের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায় ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পরিচালনা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকতে দেখে তিনি উৎসাহিত। কারণ এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তার অংশীদারদের গাজাজুড়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে এবং এর ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় পুনর্গঠনে সহায়তা করতে সক্ষম করে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে, যা ১০ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠাকে সহজ করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজা উপত্যকায় একের পর এক বিমান হামলায় চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ২৪ ঘণ্টায় দখলদার বাহিনীর হামলায় ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ৭৭ জন আহত হয়েছেন। এ হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার সকাল থেকে তিন স্থানে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় বিকালের দিকে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় হামলায় বহু মানুষ হতাহত হন। গাজা সিটির পূর্বাংশের শুজাইয়া এলাকায় হামলা হলে সেখানে আশ্রয় নেয়া বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেইতুন মহল্লার একটি ভবনে আঘাত হানলে একটি পরিবারসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের রক্তক্ষয়ী হামলার জেরে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ড বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তবে বর্তমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেও সেখানে বেশ কয়েকবার সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই হামলায় ১ হাজার ২২১ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল। নিহতদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলি সেনাদের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার পাঁচশর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ এ সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।
প্রিন্ট করুন




Discussion about this post