Print Date & Time : 3 September 2025 Wednesday 7:20 pm

গোপন চিঠিতে বরফ গললো ভারত-চীন সম্পর্কের

শেয়ার বিজ ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র হওয়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুকে পাঠানো এক গোপন চিঠি ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। খবর-বিবিসি।

রিপোর্টে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শির এই বার্তা ছিল ভারতের অবস্থান যাচাই করার একটি কৌশল। যদিও চিঠি পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতি মুর্মুর কাছে, তা দ্রুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও পৌঁছে দেয়া হয়। চিঠিতে শি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত চুক্তিগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা বেইজিংয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে পারে বলে তার আশঙ্কা ছিল।

একইসঙ্গে তিনি বেইজিংয়ের এই প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে এক প্রাদেশিক কর্মকর্তার নামও উল্লেখ করেন।

রিপোর্টে বলা হয়, গত জুন থেকে মোদি সরকার চীনের এই উদ্যোগকে গুরুত্ব দেয়া শুরু করে। কারণ তখনই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের শুল্ক-সংক্রান্ত আলাপ চলছিল এবং ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরের পেহেগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করেছেন তিনিই।

ট্রাম্পের শুল্ক আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভারত ও চীন ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘাতের গণ্ডি পেরিয়ে আলোচনায় ফেরার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর থেকেই সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি ঘটে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভারত-চীনের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহী ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে। চীন ভারতের জন্য ইউরিয়া রপ্তানির বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। আর ভারত বহু বছর পর চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা পুনরায় চালু করেছে।

এ উন্নতির সূচনা হয়েছিল ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণেÑ যা মূলত চীন ও পরে ভারতকে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে চালু হয়েছিল। মার্চে চীনা পণ্যে দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের পর বেইজিং দিল্লিকে আহ্বান জানায় ‘আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরোধিতায়’ একসঙ্গে কাজ করার জন্য। এ সময় শি জিনপিং বলেছিলেন, ‘হাতি আর ড্রাগনের একসঙ্গে নৃত্যই একমাত্র সঠিক পথ।’

জুলাইয়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বারবার একই রূপক ব্যবহার করতে থাকেন। রাষ্ট্র-সমর্থিত গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এমনকি ভারত-চীনের মধ্যে ‘ব্যালেট নৃত্য’ প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদি চলতি সপ্তাহে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফরে যাচ্ছেন। সাত বছরের মধ্যে এটাই হবে তার প্রথম চীন সফর। সর্বশেষ গত বছর রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনে শি-মোদি একই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন।

চায়না-গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের প্রধান সম্পাদক এরিক ওল্যান্ডার সম্প্রতি রয়টার্সকে বলেন, ‘শি এই সম্মেলনকে ব্যবহার করতে চাইবেন এটা দেখাতে যে, একটি পর-আমেরিকান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কেমন হতে পারে। হোয়াইট হাউসের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া চীন, ইরান, রাশিয়া ও এখন ভারতের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি।’

২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারের এসসিও সম্মেলনই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় আকারের আয়োজন।