শেয়ার বিজ ডেস্ক : চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালে সরকারের পাঁচ শতাংশ লক্ষ্যকে সামান্য মিস করেছে, এমনটাই দেখিয়েছে এএফপির অর্থনীতিবিদদের জরিপ। বিশ্ববাজারে চীনের অবস্থান, দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং প্রোপার্টি খাতের দীর্ঘমেয়াদি সংকটের প্রভাব পরবর্তী বছরগুলোয় আরও ধীর প্রবৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করছে। খবর: এএফপি।
জরিপ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে চার দশমিক ৯ শতাংশ এ, যা ২০২৩ সালের পাঁচ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমেছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি আরও কমে চার দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে চার শতাংশের নিচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। মু ডিস অ্যানালিটিক্সের হ্যারি মারফি ক্রুজ বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য অল্প সামান্য মিস হলেও ভেতরের অর্থনৈতিক ইঞ্জিন এখনও পূর্ণ গতিতে কাজ করছে না।’
চীনের অর্থনীতি এখনও করোনার পর পুনরুদ্ধারে শক্তিশালী নয়।
দীর্ঘমেয়াদি রিয়েল এস্টেট সংকট গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক রাখছে। প্রোপার্টি খাত দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। ২০২৪ সালের
ডিসেম্বর মাসে প্রধান শহরগুলোর নতুন আবাসিক সম্পত্তির লেনদেনের মোট ক্ষেত্রফল ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকার এরই মধ্যে অর্থনীতি ত্বরান্বিত করার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন প্রধান সুদের হার কমানো, প্রোপার্টি ক্রয়নীতি সহজতর করা, স্থানীয় সরকারের ঋণসীমা বৃদ্ধি এবং আর্থিক বাজারে সহায়তা প্রদান। তবে এই পদক্ষেপগুলো ধীরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সোসিয়েতে জেনেরালের অর্থনীতিবিদ মিশেল ল্যাম বলেন, ‘সরকারের প্রচেষ্টা না থাকলে ভোক্তা চাহিদা আরও খারাপ হতো।’
২০২৪ সালে চীনের রপ্তানি রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সি কঠোর বাণিজ্যনীতি অনুযায়ী নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। গোল্ডম্যান স্যাক্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক বাড়ালে ২০২৫ সালে জিডিপি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনে ভোক্তাদের ব্যয় বাড়ানো এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে উৎসাহিত করাই আগামী দিনে প্রধান সমাধান হতে পারে। তবে উদ্দীপনা বৃদ্ধি সত্ত্বেও উচ্চ শুল্ক ও প্রোপার্টি খাতের স্থবিরতা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ।
এই জরিপের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, চীনের অর্থনীতি ২০২৫ সালে ধীর গতিতে বাড়তে পারে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিক নীতি প্রণয়ন করছে। কিন্তু বৈশ্বিক চাপ, বাণিজ্য অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদার দুর্বলতা একত্রিত হয়ে দেশটির অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে সীমিত করতে পারে।

Discussion about this post