শেয়ার বিজ ডেস্ক : সম্প্রতি ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা শহর দখলের নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এরই মধ্যে মিসর ও জর্ডানের একাংশকে নিয়ে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ এক বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করার ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশনে’ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু বলেছেন, “তিনি এক ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশনে’ আছেন এবং তিনি ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ দর্শনের প্রতি ‘খুব বেশি’ জড়িত।” ঐতিহাসিকভাবে এই বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণার মধ্যে বর্তমান ইসরায়েল রাষ্ট্র, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত এলাকা এবং বর্তমান জর্ডান ও মিসরের কিছু অংশও অন্তর্ভুক্ত। খবর: আই-২৪ চ্যানেল।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী শ্যারন গাল অতীতে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট ‘নেসেটে’র ডানপন্থি সদস্য ছিলেন। সাক্ষাৎকারের সময় তিনি নেতানিয়াহুকে ‘দ্য প্রমিজড ল্যান্ড বা প্রতিশ্রুত ভূমির মানচিত্র’ তথা বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্রের একটি তাবিজ উপহার দেন। এ সময় তিনি রসিকতা করে বলেন, নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গয়না এবং অন্যান্য বিলাসবহুল সামগ্রী গ্রহণের অভিযোগে মামলায় আরও বাড়িয়ে তুলতে চান না।
সাক্ষাৎকারে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল দর্শনের’ প্রতি তিনি কোনো সংযোগ অনুভব করেন কি না—জানতে চাইলে জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেক বেশি।’
প্রসঙ্গত, বৃহত্তর ইসরায়েল বলতে ১৯৬৭ সালের জুনের ছয় দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও দেশটির সদ্য দখল করা এলাকা—পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমিকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির অগ্রদূত জে’ইভ জাবোতিনস্কিসহ শুরুর দিকের নেতৃস্থানীয় জায়নবাদীদের অনেকেই বর্তমান ইসরায়েল, গাজা, পশ্চিম তীর ও বর্তমান জর্ডানকে বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করতেন।
সাক্ষাৎকারে গাল নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করেন, তিনি ইহুদি জনগণের পক্ষ থেকে কোনো মিশনে আছেন বলে মনে করেন কি না?
জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এক মিশনে আছেন—বহু প্রজন্ম ধরে ইহুদিরা এখানে আসার স্বপ্ন দেখেছে এবং আমাদের পরেও অনেক প্রজন্ম আসবে একই স্বপ্ন নিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, “সুতরাং, আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন, ঐতিহাসিকভাবে এবং আধ্যাত্মিকভাবে আমার মধ্যে কোনো মিশন বা চেতনা কাজ করে কিনা, তার উত্তর হলো, ‘হ্যাঁ’।”
এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে, ইসরায়েলি লেখক আভি লিপকিনের একটি সাক্ষাৎকার বেশ ভাইরাল হয়।, সেখানে তিনি বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণা সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘এমন একদিন আসবে যেদিন আমাদের সীমানা লেবানন থেকে সৌদি আরবের বিশাল মরুভূমি, ভূমধ্যসাগর থেকে ফোরাত নদী (ইরাক) পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফোরাত নদীর ওপারে যে কুর্দিরা আছেন, তারা আমাদের বন্ধু। আমাদের পেছনে ভূমধ্যসাগর ও সামনে কুর্দিস্তান। লেবাননের ইসরায়েলের সুরক্ষা প্রয়োজন এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা মক্কা, মদিনা ও সিনাইও দখল করব এবং এই স্থানগুলোকে শুদ্ধ করব।’