নিজস্ব প্রতিবেদক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হলেও ফল প্রকাশে দেরি হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। তবে ফলাফল পেতে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রশিদুল আলম।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা করা হবে। ফলাফল পেতে শুক্রবার সকাল বা দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
জাকসু নির্বাচনে ১০টি হলে মোট ১১ হাজার ৮৯৭টি ভোট রয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৯৩৪ ভোট পড়েছে। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের হার ৬৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
৩৩ বছর পর হওয়া এই নির্বাচনে বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ছয়জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা ও ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেন।
ভোট শুরুর ঘণ্টা দুয়েক পর ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।
এবারের নির্বাচনে ২৫টি পদে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীদের সমর্থিত আটটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। গতকাল রাতে ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেল নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেয়। ফের নির্বাচন কমিশন গঠন করে তফসিল ঘোষণাসহ পুনর্নির্বাচনের দাবি জানায় প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের চার প্যানেল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফের নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন চারটি প্যানেলের প্রার্থীরা। প্যানেলগুলো হলো সম্প্রীতির ঐক্য, সংশপ্তক পর্ষদ, অঙ্গীকার পরিষদ, ছাত্রফ্রন্ট একাংশের প্যানেল। এই দাবিতে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও একাত্মতা জানিয়েছেন।
এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের প্রার্থীরা।
ডাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান।
জিএস পদে জয়ী হয়েছেন এসএম ফরহাদ। তিনিও ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে লড়েছেন। এজিএস পদেও বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী মহিউদ্দীন খান।