শেয়ার বিজ ডেস্ক : গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ডেটা অনুযায়ী দেখা গেছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের চাপের সম্মুখীন হচ্ছে মার্কিন ব্যবসা। এর ফলে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদক মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। খবর-এএফপি।
সেবার খাতে মূল্যবৃদ্ধি পণ্যের তুলনায় বেশি হওয়ায় বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বড় বৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছেন যে, বিভিন্ন অস্থির উপাদানের কারণে শিরোনামের এই বৃদ্ধি কিছুটা অতিমূল্যায়িত হতে পারে। যদিও শুল্কের আওতায় থাকা পণ্যের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মজুরি ও শ্রম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উৎপাদক মূল্যসূচক মাসওয়ারি ভিত্তিতে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে, যা জুনে সমান ছিল। ব্রিফিং ডটকমের বিশ্লেষকরা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
পিপিআই উৎপাদনকারীদের দামের পরিবর্তন পরিমাপ করে এবং কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন এটি ভোক্তাদের জন্য ভবিষ্যতের মূল্য প্রবণতার একটি পূর্বাভাস।
ওয়াল স্ট্রিটে তিনটি প্রধান মার্কিন সূচক রিপোর্টের পরে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, তবে দিনের শেষে প্রাথমিক ক্ষতি কমে গেছে।
বছরের শুরুতে বেশিরভাগ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো খাতে আরও কঠোর শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ফলে মার্কিন ব্যবসাগুলো ট্রাম্পের শুল্কের সঙ্গে লড়াই করছে।
শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলোকে হিসাব করলে পিপিআই বছরের ভিত্তিতে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে। পণ্যের খাতে দাম শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে, আর সেবা খাতে এক দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি, যা মার্চ ২০২২-এর পর সর্বোচ্চ। জুলাই মাসে বৃদ্ধি ‘প্রায় সবখাতেই’ বিস্তৃত হলেও, এর তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর অধিকাংশই পাইকারি এবং খুচরা বাণিজ্য সেবার কারণে, যা সরবরাহ চেইনে ট্রেড-বাধার প্রভাব নির্দেশ করে। খাদ্যপণ্যও জুলাই মাসের বৃদ্ধির ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী।
ন্যাশনওয়াইডের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বেন আয়ার্স একটি নোটে বলেছেন, উৎপাদনকারীদের ইনপুট খরচ জুলাইয়ে বেড়েছে, কারণ ব্যবসায়ের ওপর শুল্কের প্রভাব বাড়ছে।
স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় উৎপাদকদের খরচ বাড়িয়েছে, ফলে এর মূল্য সাম্প্রতিক মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
আয়ার্স আশা করছেন, শুল্কের খরচ আগামী মাসে ভোক্তাদের মূল্যেও স্থানান্তরিত হতে পারে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের সিনিয়র মার্কিন অর্থনীতিবিদ ম্যাথিউ মার্টিন বলেছেন, শুল্কের আওতায় থাকা পণ্যের দাম দ্রুত বাড়ছে, যা নির্দেশ করছে যে, ব্যবসাগুলো শুল্কের খরচ বহন করার সক্ষমতা ও ইচ্ছা হারাতে শুরু করেছে।
এদিকে ভোক্তা মূল্যসূচক জুলাইয়ে ২ দশমিক ৭ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে, যা দেখায় ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব এখনও সীমিত। সরকারি চাকরি তথ্যও দেখাচ্ছে সাম্প্র্রতিক নিয়োগের সংখ্যা অনুমান থেকে অনেক কম হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।

Discussion about this post