শেয়ার বিজ ডেস্ক : ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক শিথিলকরণ বৈশ্বিক বাণিজ্যে স্বস্তি এনেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করেছে। ফলে ২০২৫ সালের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। ২০২৬ সালের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসও ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ করা হয়েছে। খবর – আল জাজিরা।
আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়েরে-অলিভিয়ে গুরিঞ্চাস বলেন, হোয়াইট হাউস কার্যত শুল্কহার ২৪ শতাংশ থেকে নামিয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ করেছে, যা ইতিবাচক হলেও ‘ঐতিহাসিকভাবে এখনও উচ্চ’ পর্যায়ে রয়েছে। তিনি সতর্ক করেন, মার্কিন নীতি এখনো ‘অত্যন্ত অনিশ্চিত’ এবং এর ফলে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও চীনের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্দিষ্ট পণ্যে শুল্ক কমিয়েছে।
ইইউ পণ্যে শুল্ক ৩০ শতাংশ না বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে সীমিত করা হয়েছে। বিনিময়ে ইইউ প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন তেল ও গ্যাস কিনতে সম্মত হয়েছে।
জাপান মার্কিন বোয়িং বিমান কিনতে রাজি হয়েছে, যার বিনিময়ে রপ্তানি পণ্যে শুল্ক সীমিত থাকবে।
চীনের ক্ষেত্রেও কিছু শুল্ক কমানো হয়েছে, যদিও আগে বেইজিং প্রতিশোধ হিসেবে প্রতিরক্ষা শিল্পে ব্যবহƒত ‘রেয়ার আর্থ’ ধাতুতে শুল্ক বসিয়েছিল।
তবে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু এই ইইউ-মার্কিন চুক্তিকে ‘ইউরোপের জন্য অন্ধকার দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আইএমএফ আরও বলেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। গুরিঞ্চাসের ভাষায়,
‘স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংকই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সুদের হার না কমানোয় সমালোচনা করেছেন, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য ২০২৫ সালে এক শতাংশ ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে, যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেশি। এতে দেশটি জি৭-এর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে ওঠা ইউরোপীয় অর্থনীতি হিসেবে থাকছে।
ব্রিটিশ চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস জানিয়েছেন, এই পূর্বাভাস প্রমাণ করে সরকার সিটি রিজিওন পরিবহন, সাশ্রয়ী আবাসন ও বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের পথে রয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি কমেছে ১১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার (৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন পাউন্ড), ফলে বাণিজ্য ঘাটতি মে মাসের ৯৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮৬ বিলিয়নে।