Print Date & Time : 17 November 2025 Monday 8:48 am

টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য জাতীয় অ্যাকুয়াকালচার নীতি জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাকুয়াকালচার খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গতকাল রোববার রাজধানীর শেরাটন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো একটি জাতীয় কর্মশালা। অ্যাকুয়াকালচার নেটওয়ার্ক অফ বাংলাদেশ (এএনবি) আয়োজিত এই কর্মশালায় সহযোগিতা করেছে সি-ই-এফ-এ-এস, ইভলভড রিসার্চ কনসাল্টিং এবং ম্যাকঅ্যালিস্টার এলিয়ট অ্যান্ড পার্টনার্স (ইউকে)। অনুষ্ঠানে নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিল্প উদ্যোক্তা, চাষি ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে অ্যাকুয়াকালচার খাত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি, রোগব্যাধি, বায়োসিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ এবং বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি, প্রন ও কাঁকড়ার চাষে ঝুঁকিও বেড়েছে। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ১৯৯৮ সালের জাতীয় মৎস্য নীতি সাধারণ নির্দেশনা প্রদান করলেও বর্তমান চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এটি পর্যাপ্ত নয়। কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদ প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. লিফাত রাহি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অ্যাকুয়াকালচারের বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ইনল্যান্ড) ড. মো. মোতালেব হোসেন। ‘অ্যাকুয়াকালচারের টেকসই বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ: বাংলাদেশের জন্য জাতীয় নীতির প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. আবদুল ওহাব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান মণ্ডলের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশনেন সহযোগী অধ্যাপক ড. হেলেনা খাতুন, ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. ফারুকুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী, ময়মনসিংহ মৎস্য ফার্ম  ও  হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, ফিশটেক হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তারিক সরকার।

সরকারি প্রতিনিধি, হ্যাচারি মালিক ও নারী নেত্রীসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা  জাতীয় নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু সহনশীলতা, জেন্ডার সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সমুদ্রিক স্থান পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিতে বলেন।

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ড. মারিয়া জামান, অ্যাকুয়াকালচারে লিঙ্গসমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নীতি পর্যায়ে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা করেন।

সমাপনী বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের টেকসই অ্যাকুয়াকালচার নিশ্চিত করতে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ।

কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অ্যাকুয়াকালচার নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, টেকসই অ্যাকুয়াকালচার নিশ্চিত করতে গবেষণা, শিল্প, সরকারি সংস্থা ও চাষিদের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।