শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
২৮ ভাদ্র ১৪৩২ | ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭
  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শেয়ার বিজ
Advertisement
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
➔ ই-পেপার
No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
No Result
View All Result
শেয়ার বিজ
No Result
View All Result

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কার প্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

Share Biz News Share Biz News
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫.১:২২ পূর্বাহ্ণ
বিভাগ - পত্রিকা, সম্পাদকীয় ➔ প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
A A
ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কার প্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত
0
VIEWS
Share on FacebookShare on TwitterShare on Linkedin

ড. মাহরুফ চৌধুরী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবসময়ই এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করেছে। কারণ এই নির্বাচন কেবল শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে না, বরং জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণেও ভূমিকা রাখে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকসু কার্যকর না থাকায় সাম্প্রতিক এই নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরি হয়েছিল, তা স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। সাম্প্রতিক এই নির্বাচনে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ বিজয় তাই কেবল একটি নির্বাচনী ফলাফল নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নতুন প্রজš§ দেশে কোন ধরনের রাজনীতি চায় এবং কোন ধরনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, তার এক সুস্পষ্ট বার্তা বহন করছে।

জাতীয় জীবনে এই নির্বাচনের তাৎপর্য নিহিত আছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মৌলিক প্রতীকী অর্থে। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, গলাবাজি, পেশিশক্তি, ক্ষমতার দম্ভ, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কিংবা দমননীতির মাধ্যমে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার পুরোনো ধ্যানধারণা তারা আর মেনে নিতে রাজি নয়। প্লেটোর ‘দ্য রিপাবলিক’-এ যেমন বলা হয়েছে, রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচারহীন হয়, তবে তরুণ প্রজš§ই সর্বপ্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায় যেন সেই প্রাচীন দর্শনের আধুনিক প্রতিফলন। এখানে তারা প্রথাগত দলীয় রাজনীতির দলান্ধ আনুগত্যের বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং ঘোষণা দিয়েছে, প্রকৃত শিক্ষার্থীবান্ধব, গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য রাজনীতির পথ ছাড়া অন্য কোনো পথে থাকলে তাদের সমর্থন পাওয়া যাবে না।

ডাকসুর ইতিহাস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার বিকাশ, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রগঠনের ধারাবাহিকতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। এটি কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নয়, বরং জাতির রাজনৈতিক আদর্শ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির চেতনা বিকাশের প্রাণকেন্দ্র। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে ঢাকসু নেতৃত্ব দিয়েছিল দেশের শিক্ষানীতি পুনর্গঠনের সংগ্রামে, যেখানে ছাত্রসমাজ প্রমাণ করেছিল, রাষ্ট্রের অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তারা কখনও নীরব দর্শক হতে পারে না। এরপর ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, যা স্বৈরাচারী আইয়ুব শাসনের পতন ঘটিয়েছিল, সেখানে ডাকসুর নেতৃত্বাধীন ছাত্রনেতারাই হয়ে উঠেছিলেন জাতির দিকনির্দেশক। প্রসঙ্গত, এই ষাটের দশকেই ছাত্ররাজনীতিতে সর্বপ্রথম দলীয় লেজুড়বৃত্তির সূচনা হয়।

সবার জানা যে, শুধু ত-ই নয়, ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতার আন্দোলনে ও মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজের অবদান ছিল ঐতিহাসিক। ডাকসু ভবন তখন রূপ নিয়েছিল স্বাধীনতার সংগ্রামের কলাকৌশল নির্ধারণের কেন্দ্রস্থলে, যেখানে ভবিষ্যৎ মুক্তির পথরেখা আঁকা হয়েছিল। ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও ছাত্রনেতাদের অগ্রণী ভূমিকা জনগণকে রাস্তায় নামতে উদ্বুদ্ধ করেছিল এবং গণ-আন্দোলনের চাপেই পতন ঘটে একদলীয় স্বৈরশাসনের। এই ধারা আবারও নতুন রূপ নেয় ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে, যখন তরুণ প্রজš§ ‘বৈষম্যহীন’ ও ‘স্বৈরাচারমুক্ত’ রাষ্ট্রের দাবিতে রাস্তায় নামে এবং ঢাকসু নেতৃত্ব জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরতন্ত্রের পতনে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার এই ধারাবাহিক ইতিহাস প্রমাণ করে, ডাকসু কেবল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ কোনো সংগঠন নয়; বরং এটি গোটা জাতির গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের পথে দেশের অভিযাত্রার মূর্ত প্রতীক। তাই এবারের নির্বাচনও নিছক একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এ নির্বাচনের ফলাফল দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা উচিত। তাদের রায়ে ফুটে উঠেছে, পুরোনো স্বার্থসর্বস্ব ক্ষমতাকেন্দ্র্রিক ও পারিবারিক পরিচয়নির্ভর দলীয় রাজনীতির পরিবর্তে তারা চায় স্বচ্ছতা, ন্যায়পরায়ণতা, অংশগ্রহণমূলক নেতৃত্ব ও রাজনীতিতে নতুন চিন্তার বিকাশ।

শিক্ষার্থীরা এবারের ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি মৌলিক সত্য জাতির সামনে তুলে ধরেছে যে, আধুনিক নাগরিক সমাজে রাজনীতিতে জয়ী হওয়া বা টিকে থাকার জন্য কেবল বলপ্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শন যথেষ্ট নয়, বরং প্রয়োজন সমাজের সর্বশ্রেণির মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও আন্তরিকতার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মানুষের আস্থা অর্জন। মানুষ স্বভাবতই স্বাধীনচেতা ও আত্মমর্যাদায় আপসহীন; তারা কারও দাসত্বে বা জোর-জবরদস্তিমূলক রাজনীতির শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে বাঁচতে চায় না। যারা এখনও মনে করেন, ভয় দেখিয়ে কিংবা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সংস্কারবিরোধী সেই রাজনৈতিক নেতারা ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায়ের মধ্য দিয়ে কঠোর জবাব পেয়ে গেছেন।

রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বে ম্যাক্স ওয়েবারের বিশ্লেষণ এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তার মতে, ‘সহিংসতার ওপর নির্ভরশীল শাসন সাময়িক, কিন্তু বৈধতা অর্জনকারী শাসন দীর্ঘস্থায়ী।’ ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল সেই তত্ত্বকেই নতুনভাবে স্মরণ করিয়ে দিল। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটের মাধ্যমে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ক্ষমতার অপব্যবহার বা কৃত্রিম প্রভাব নয়, বরং নৈতিকতা ও আস্থার ভিত্তিতেই নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য হতে পারে। এ বিষয়টি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ নয়; বরং পুরো জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় মুহূর্ত। ইতিহাসে দেখা যায়, যে শাসন বলপ্রয়োগ ও দমননীতির ওপর দাঁড়িয়েছিল, যেমন রোমান সাম্রাজ্যের শেষ অধ্যায় কিংবা সাম্প্রতিক শতাব্দীর নানা স্বৈরশাসন, তারা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অপরদিকে যেসব নেতৃত্ব জনগণের আস্থা, বৈধতা ও ন্যায়নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাদের শাসন ইতিহাসে স্থায়ী হয়েছে। ডাকসুর নির্বাচনে নতুন প্রজšে§র শিক্ষার্থীরা সেই বৈধতার রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, ঢাকসুর সাম্প্রতিক নির্বাচন আমাদের সামনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা উšে§াচন করেছে। আর তা হলো বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় সংস্কারবিমুখ, প্রথাগত ও একরৈখিক রাজনীতির যুগ দ্রুত অবসানের পথে। রাজনীতি আর কেবল আবেগনির্ভর সেøাগান সর্বস্ব কিংবা প্রতীকী মূলধনের খেলা নয়; বরং এটি এখন পরিণত হয়েছে কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা, দূরদর্শিতা, আত্মত্যাগ ও মূল্যবোধের এক প্রতিযোগিতায়। ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে, যে সমাজে রাজনীতি সময়ের পরিবর্তনকে অবহেলা করে কিংবা নতুন প্রজšে§র আকাক্সক্ষাকে অগ্রাহ্য করে, সেখানে পুরোনো রাজনীতি অবশেষে মুখ থুবড়ে পড়ে এবং ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ফরাসি দার্শনিক রুশো যেমন বলেছিলেন, ‘প্রতিটি প্রজšে§র নিজের জন্য নতুন সমাজচুক্তি করার অধিকার আছে।’ আজকের তরুণরাও সেই অধিকারকে ব্যবহার করছে এবং ঢাকসু নির্বাচনে তাদের রায় সুস্পষ্ট করে দিয়েছে, প্রচলিত রাজনৈতিক বয়ান ও কর্মকাণ্ড আর কাজ করবে না।

যারা নতুন প্রজšে§র পথপ্রদর্শকদের তথা যুগের নকিবদের চিন্তাভাবনা উপেক্ষা করে নিজেদের পুরোনো ধ্যানধারণাকে আঁকড়ে ধরে থাকবে, তারা নির্বাচনের বৈতরণী পাড়ি দিতে পারবে না। বরং তারা জনগণের সমর্থন হারিয়ে ক্রমেই অপাঙ্ক্তেয় ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। সাম্প্রতিক নানা আলাপ-আলোচনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যথার্থই উল্লেখ করেছেন, ছাত্রশিবিরের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই মূলত বুদ্ধিবৃত্তিক, কৌশলগত ও আদর্শনির্ভর। ফলে এ শক্তির মোকাবিলা কেবল আবেগ বা ক্ষমতার দম্ভ দিয়ে সম্ভব নয়; বরং সমান শক্তিশালী বুদ্ধিবৃত্তিক, কৌশলগত ও আদর্শিক রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। এখানে মূল শিক্ষা হলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি যদি বাস্তবিক পরিবর্তনের দিকে এগোতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই নতুন প্রজšে§র আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আজকের তরুণদের হাতেই আগামীকালের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব। তাদের উপেক্ষা করা মানে গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করা, আর গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করা মানে রাজনৈতিক সংস্কারের ইতিহাসের আসন্ন ভরাডুবিকে ডেকে আনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাত্রই অবগত আছেন যে, মানুষকে যখন তার স্বাভাবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন সে তার ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে বিকল্প শক্তি খুঁজে নেয় এবং ধীরে ধীরে আরো দৃঢ় হয়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, দমননীতি যত কঠোর হয়, প্রতিরোধও তত তীব্র, গভীর ও সংগঠিত রূপ লাভ করে। আমাদের লোককথায় প্রচলিত প্রবাদ হলো, ‘বাড়ির দরজার বারবার ছাগলে খাওয়া গাছটি একদিন শক্ত হয়ে উঠতে থাকে, তখন ঘূর্ণিঝড়ও তাকে উপড়ে ফেলতে পারে না।’ এ কথাই যেন প্রতিফলিত হয়েছে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নানা সময় কঠোর দমননীতির মুখে পড়তে হয়েছে, রাজনৈতিক পরিসরে তাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে কোনো শেকড়বদ্ধ আন্দোলনকে কেবল দমন করে কখনও নিঃশেষ করা যায় না; বরং সেটি ভেতরে ভেতরে শক্তি সঞ্চয় করে একসময় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে।

যে ছাত্রসংগঠনটিকে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অঙ্গনে দাঁড়াতেই দেওয়া হয়নি, আজ সেখানে তারা নিরঙ্কুশ প্রতিনিধিত্ব লাভ করেছে। সেটা কীভাবে সম্ভব হলো এই বাস্তবতা প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর উপলব্ধি করা এবং সেই অনুযায়ী ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করা জরুরি। দমনপীড়নের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না, সেটি ইতিহাস বহুবার প্রমাণ করেছে। লাতিন আমেরিকার সামরিক শাসন হোক, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসন হোক, কিংবা বাংলাদেশের সামরিক ও একদলীয় স্বৈরতন্ত্র হোকÑসব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, দমননীতি ব্যর্থ হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত শাসকশ্রেণিকে সংস্কার ও গণ-আকাক্সক্ষার কাছে নতিস্বীকার করতে হয়েছে। তাই যারা ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারায় ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে, তাদের প্রয়োজন ইতিবাচক সংস্কার, মুক্ত আলোচনা এবং নতুন প্রজšে§র আকাক্সক্ষাকে সম্মান জানানো। যদি রাজনৈতিক শক্তিগুলো ডাকসুর এই নির্বাচন থেকে শিক্ষা না নেয়, তবে তরুণ প্রজš§ তাদের প্রত্যাখ্যান করবেই। কারণ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে রাজনীতি সময়ের সঙ্গে নিজেকে খাপখাইয়ে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি, যে রাজনীতি তরুণদের স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে অগ্রাহ্য করেছে, তার অস্তিত্ব কখনও টেকেনি। বর্তমান সময়ও রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা ও তার প্রয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ তার ব্যতিক্রম নয়।

বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ডাকসু নির্বাচনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো নতুন প্রজš§ কেবল সংখ্যায় নয়, বিদ্যা, বুদ্ধি ও আবেগের শক্তি নিয়েই জাতীয় অঙ্গনে এগিয়ে আসছে। তারা প্রযুক্তি-সচেতন, বিশ্বপরিসরের রাজনীতি সম্পর্কে অবহিত এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের স্পষ্ট ধারণা পোষণ করে। কিন্তু এই তরুণ শক্তির আবেগ ও উদ্যম যদি অভিজ্ঞ প্রবীণ প্রজšে§র জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সমন্বিত না হয়, তবে রাজনীতির আদর্শ ও প্রক্রিয়ায় পূর্ণতা আসবে না। অ্যারিস্টটলের মতে, তরুণরা পরিবর্তনের শক্তি আর প্রবীণরা স্থায়িত্বের প্রতীক। এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই টেকসই সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী যে গণআকাক্সক্ষা এখন বাংলাদেশে জাগ্রত, তার প্রতিফলন ঘটাতে হলে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় এই প্রজš§গত সমন্বয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। কেবল তরুণদের আবেগকে কাজে লাগানো বা প্রবীণদের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করাই যথেষ্ট নয়; বরং একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি ও কাঠামোর প্রয়োজন, যেখানে উভয় প্রজšে§র শক্তিকে সমন্বিত করে নতুন দিগন্ত উšে§াচিত হবে।

ইতিহাসও এই সত্যকেই সমর্থন করে। ইউরোপের গণ-আন্দোলন থেকে শুরু করে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম কিংবা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধÑসব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সফল রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে তরুণদের আবেগ, শক্তি ও সাহসের সঙ্গে প্রবীণদের প্রজ্ঞা, কৌশল ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে। ডাকসুর নির্বাচনী ফলাফল তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে আবারও মনে করিয়ে দিল যে, পরিবর্তন তখনই টেকসই হয়, যখন প্রজšে§র ফাঁক নয়, বরং প্রজšে§র সেতুবন্ধন সৃষ্টি করা যায়। ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে, তরুণ প্রজš§ আর পুরোনো ধাঁচের স্বার্থনির্ভর ক্ষমতাকেন্দ্রিক, ব্যক্তিনির্ভর ও দমনমূলক রাজনীতি চায় না। তারা চায় তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক, তারা চায় প্রথাগত চিন্তাভাবনা ও রাজনীতির জগতে সংস্কার, সহমর্মিতা, কৌশলগত বুদ্ধি এবং আদর্শভিত্তিক নেতৃত্বের বিকাশ। যারা এই বাস্তবতা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হবে, তারা ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হবে।

এ মুহূর্তে সময় এসেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জেগে ওঠার, নিজেদের পুনর্গঠনের এবং তরুণ প্রজšে§র প্রত্যাশাকে সম্মান করার। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পুনর্গঠনে সংস্কারপ্রয়াসী হওয়া এখন আর বিকল্প নয়, এটি অনিবার্য। ইতিহাসের আলোকে বর্তমানকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সময়ের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন একটি অবশ্যম্ভাবী প্রক্রিয়া। যেকোনো রাজনৈতিক শক্তি যদি এই পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তারা দ্রুতই হারাবে অতীতের অর্জিত গৌরব এবং জনগণের আস্থা। আর যদি এই বার্তাকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে আগামীর বাংলাদেশে রাজনীতির অঙ্গন হবে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক, প্রগতিশীল ও জনকল্যাণমুখী। এমন একটি রাজনীতি, যেখানে তরুণদের উদ্যম ও প্রবীণদের অভিজ্ঞতা মিলিত হবে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা শুধু স্বার্থের জন্য নয়, বরং ন্যায্যতা, নৈতিকতা এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ব্যবহƒত হবে। ডাকসু নির্বাচনের এই শিক্ষণীয় ফলাফলই জাতির রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার ভবিষ্যতের জন্য একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা। আর দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক শক্তিগুলো নতুন প্রজšে§র চেতনা ও স্বপ্নকে কেন্দ্র করে তাদের রাজনীতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে হবে।

ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
Previous Post

সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ, বাজারে ক্রেতাশূন্যতা স্পষ্ট

Next Post

বাজেট বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

Related Posts

বাজেট বাস্তবায়নের হার  বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক
পত্রিকা

বাজেট বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ, বাজারে ক্রেতাশূন্যতা স্পষ্ট
অর্থ ও বাণিজ্য

সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ, বাজারে ক্রেতাশূন্যতা স্পষ্ট

সালমান এফ রহমানের  জরিমানা ১০০ কোটি টাকা
অর্থ ও বাণিজ্য

সালমান এফ রহমানের জরিমানা ১০০ কোটি টাকা

Next Post
বাজেট বাস্তবায়নের হার  বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

বাজেট বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

Discussion about this post

সর্বশেষ সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়নের হার  বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

বাজেট বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধির প্রয়াস চলমান থাকুক

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কার প্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কার প্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ, বাজারে ক্রেতাশূন্যতা স্পষ্ট

সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ, বাজারে ক্রেতাশূন্যতা স্পষ্ট

সালমান এফ রহমানের  জরিমানা ১০০ কোটি টাকা

সালমান এফ রহমানের জরিমানা ১০০ কোটি টাকা

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির  গণছুটি স্থগিত

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গণছুটি স্থগিত




 

আর্কাইভ অনুসন্ধান

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 ১২৩৪৫৬
৭৮৯১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

প্রকাশক ও সম্পাদক ✍ মীর মনিরুজ্জামান

তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৪৮

একটি শেয়ার বিজ প্রাইভেট লি. প্রতিষ্ঠান

(প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রয়োজন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে)

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়

বিএসইসি ভবন (১০ তলা) ॥ ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ॥ ☎ 01720123162, 01768438776

  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET