নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : পতনের ধাক্কা সামলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। তবে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৮১ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৩ পয়েন্টে এবং ডিএস ৩০ সূচক ২ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৯১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৪৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৯৪ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৩টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ২৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৯টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৫ কোটি ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৫০৭টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৮২ হাজার ৩৮৭ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরে ধীরে উন্নতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে। বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বাজার আরও চাঙ্গা হতে পারে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post