নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। তবে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১১৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনেদেনও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৮০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৭১ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩৪ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮১টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড’ ক্যাটাগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৯টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৯ কোটি ৫৪ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৩টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ২৫ হাজার ৬৪৯ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৭৮৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৩৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২৩৭টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজি ভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কি না, সেটাই এখন খোর বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনেদেনরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post