নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : পতনের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেননেও অনেকটাই বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১১৬ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১১২ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২৯ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনেেনও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৭টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৫১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
দিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫১ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৪ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড ক্যাটাগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ছয়টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৭ কোটি ৭১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭২টি শেয়ার এবং ইউনিট দুই লাখ ১০ হাজার ৪৯৩ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৭৩৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬৫৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২১৯টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরে ধীরে উন্নতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে। বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বাজার আরও চাঙ্গা হতে পারে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কি না, সেটাই এখন খোর বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনেেনরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post