নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেননেও কিছুটা কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬১ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৭ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৩৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৪২ দশমিক ০৭ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে লেনেদেন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৮০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৪৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৭২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৯৮ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩৭ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর। ‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৭টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৭ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৫টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ২৪ হাজার ১৪৪ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৭৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৮৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২২৪টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮০টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ২৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১০ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে; যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরে ধীরে উন্নতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে। বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বাজার আরও চাঙ্গা হতে পারে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন খোর বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনেদেনরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post