নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে আবার লেনদেনের গতি কমতে দেখা যাচ্ছে। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া লেনদেন ধারাবাহিকভাবে কমে ৬০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এতে এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত ১২ আগস্টের পর সব থেকে কম লেনদেন হয়েছে। লেনদেনর গতি কমলেও ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে প্রধান সূচক।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে ব্যাংকসহ বেশকিছু বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়নি। এমনকি বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচকের পতন হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩টির। আর ৭৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫৩টির দাম কমেছে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া ৫৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ১৪টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২টির দাম কমেছে এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫০৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৭৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭০৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১২ আগস্টের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৪ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সোনালী পেপার, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইউসিবি ব্যাংক, টেকনো ড্রাগস, সিটি ব্যাংক এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।