বিজ্ঞানের কল্পকাহিনীর জগতে, Quantum Entanglement, Frequencies ইত্যাদি নিয়ে একটি অসাধারণ যাত্রা হিসেবে আবির্ভূত হয় স্ট্রিং তত্ত্বের এগারো মাত্রার কাঠামোর ভিত্তিতে তৈরি এ উপন্যাস ।এই উপন্যাস কোয়ান্টাম মেকানিক্স, রোমান্টিক আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ‑বিবেচনা মিশিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে—যে গল্পটি আবেগের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয় ।
প্লটের সারসংক্ষেপ
উপন্যাসে আমাদের সামনে আসেন দুই জন অসাধারণ চরিত্র: মি. তারা মিয়া, একজন দার্শনিক‑বিজ্ঞানী, যিনি চতুর্থ ডায়মেনশনে বাস করেন; এবং মি. সুরুজ আলি, একজন কৌতূহলী কোয়ান্টাম তত্ত্ববিদ, যিনি পরিচিত তৃতীয় ডাইমেনশন বা আমাদের এ পৃথিবীতে বাস করেন। এই দুজনের রক্তের বন্ধন নয়, বরং কোয়ান্টাম অন্তঃবদ্ধতার (entanglement) সূত্রে বাধা তাদের মৌলিক কনা গুলো মৌলিকভাবে সংযুক্ত—কোনো বিশেষ কণিকাদের অদ্ভুত সংযোগ যা স্থান ও সময় অতিক্রম করে তা চমকপ্রদ ভাবে এ উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে ।
প্রতিক্রিয়াশীল ফ্রিকোয়েন্সির পরীক্ষামূলক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দুইজন ভিন্ন ডাইমেনশনে বসবাস করা ব্যক্তি কি করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন? তাদের রহস্যময় এবং দার্শনিক আচ্ছাদনের অদ্ভুত চিন্তা ভাবনা পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণে যথেষ্ট । রহস্য উদঘাটনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সুরোজ আলি চতুর্থ ডায়েমনশনে যাত্রা শুরু করেন—এ কোয়ান্টাম অভিযান তাঁকে বাস্তবতার সীমা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তিনি সপ্তম মাত্রায় গমন করেন—যেখানে তিনি অবশেষে তারা মিয়ার দেখা পান ।এক রহস্যময় সপ্তম‑মাত্রার নারী, যাঁর অস্তিত্ব আমাদের জাগতিক প্রেম ও মিলনের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে ।
গল্প এগিয়ে যায় এবং দুটো পুরুষ চরিত্রই চরম সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হন। সুরোজ আলি পরিচিত পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন এবং মাল্টিভার্সের পথ বেছে নেন, যেখানে প্রতিটি সিদ্ধান্তই এক নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, তারা মিয়া সময়পথে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন—নিউটনের (Sir Isaac Newton) যুগে। বিজ্ঞানের ভিত্তিস্তম্ভের উপর নতুন কিছু করাই তাঁর উদ্দেশ্য ।
তাদের যাত্রা এক সময় স্পেসটাইমের ভারসাম্য বিনষ্ট করার হুমকিতে পড়ে । এ উপন্যাস প্রশ্ন তোলে—সময় কি ধ্বংসের সীমানায় আছে? মানুষের হস্তক্ষেপ কি বিপর্যয়, না মুক্তির প্রতিশ্রুতি বয়ে আনবে?
বিষয় & শৈলী
উপন্যাস সূক্ষ্মভাবে নেভিগেট করে নানা জটিল বিষয়:
এ উপন্যাসে কোয়ান্টাম পরিচয় ও স্বাধীন ইচ্ছা
অসীম দূরত্ব পেরিয়ে মিলনের আকাঙ্ক্ষায় ধরা দেয়। রোমান্স কিংবা ক্ষণস্থায়ী কোনো আবেগ নয় বরং আত্মার একটি গভীর শক্তি এখানে বিজ্ঞানেই গতিময়তা লাভ করেছে । বিশ্বাসের শক্তি — এবং রহস্যময় রোমান্স এ উপন্যাসে পর্যবেক্ষিত হয়। উঁচু -ধারণার পদার্থবিজ্ঞানের মেলবন্ধনে লেখকের লেখন শৈলী একদিকে যেমন স্বরবদ্ধ এবং তাত্ত্বিক, অন্যদিকে তা আবেগ ও যুক্তির সমন্বয়ে প্রাঞ্জল ।বৈজ্ঞানিক সংলাপ এবং অন্তর্মুখী স্বরূপ ও মনোলগের মধ্য দিয়ে পাঠককে শুধু গল্প অনুসরণ করতেই বলছে না; বরং মহাবিশ্বে তার নিজের অবস্থান নিয়েও ভাবার আহ্বান জানাচ্ছে।
চূড়ান্ত ভাবনাঃ
Entangled Frequencies, প্রেম, সময়, এবং অস্তিত্বের অসীম সম্ভাবনার অনবদ্য অন্বেষণ এ উপন্যাস । কল্পনা করে—আসলে অন্তঃবদ্ধতা শুধুমাত্র একটি নিছক বৈজ্ঞানিক ঘটনা তা নয়, এটি রোমান্টিক হতেও পারে আবার নাও হতে পারে । শেষ অধ্যায়গুলো রয়ে যায় এক সময়োপযোগী এবং রহস্যঘেরা অন্ত-বিন্দু হিসেবে, যা পাঠককে ভাবায়: অসীম পথের মহাবিশ্বের মধ্যে, কোন পথ বেছে নেব আমরা—এবং কোন পথ বেছে নেবে আমাদের?
স্নায়বিক রোমান্স, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান, এবং বিজ্ঞান ও আত্মার সীমানা ঝাপসা করে দেয়া গল্পের অনুরাগীদের জন্য এ উপন্যাস এক সত্যিকারের বিস্ফোরণ ।

Discussion about this post