শেয়ার বিজ ডেস্ক : এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বৈঠকে বসেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, জ্বালানি, অবকাঠামো ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেছেন। একইসঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাণিজ্য, জ্বালানি ও অবকাঠামোসহ নানা খাতে সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেছেন দুই নেতা।
পুতিন জানান, সাম্প্র্রতিক সময়ে দুই দেশের বাণিজ্য কমেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে কেন বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছে এবং তা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে’। একইসঙ্গে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার জন্য শোক প্রকাশ করে পুতিন আশা প্রকাশ করেন, শরিফের নেতৃত্বে দেশটি দ্রুত দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।
জবাবে শরিফ বলেন, গত বছর পাকিস্তান রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করায় বাণিজ্যে নতুন গতি এসেছে। তিনি বেলারুশ, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বাণিজ্য করিডরের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
গত বছর আস্তানায় বৈঠকের পর থেকে কৃষি, লোহা-ইস্পাত, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি হয়েছে। জুলাইয়ে করাচির পাকিস্তান স্টিল মিলস পুনরুজ্জীবিত ও সম্প্র্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ ও মস্কো।
এছাড়া পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কো সফরের আগ্রহও প্রকাশ করেন শরিফ। তিনি বলেন, অনেক বছর হয়ে গেছে আমি রাশিয়া যাইনি। ফিরে গিয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতি মনে করতে চাই।
শরিফ বলেন, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে সম্মান করে পাকিস্তান, তবে ইসলামাবাদও মস্কোর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চায়। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পাকিস্তান জ্বালানি আমদানি ও বহুমুখী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনেই রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে।
রাশিয়ার জন্যও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা মানে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পাশাপাশি নতুন কৌশলগত অবস্থান তৈরি করা। পুতিন পাকিস্তানকে ‘ঐতিহ্যবাহী অংশীদার’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ ও পার্লামেন্টারি কূটনীতিতেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা বলেন।
বৈঠকে দুই নেতা সম্মত হন, বৈশ্বিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ বাড়ানো হবে। শরিফ বলেন, এই অংশীদারিত্ব ‘আঞ্চলিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি’ বয়ে আনবে।
পুতিনও আশা প্রকাশ করেন, নভেম্বরের এসসিও প্রধানমন্ত্রীদের সম্মেলনসহ আসন্ন বৈঠকগুলো সম্পর্কের নতুন গতি আনবে।

Discussion about this post