নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। ডিএসইর মতো সিএসইতেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। প্রথম তিন ঘণ্টার লেনদেনে মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। এ দিন প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর ভালো-মন্দ সব ধনের কোম্পানির শেয়ারের ঢালাও দরপতন হতে থাকে। এই পতন প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ে ১৩৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। বিপরীতে দাম কমে ১৯৯টির। এছাড়া ৬৬টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৬টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১০৫টির দাম কমেছে এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৫টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ায় ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে পাঁচটির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই ৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে ওঠে এসেছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৯৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে বড় ভূমিকা ছিল ওরিয়ন ইনফিউশনের। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয় ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল রবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সোনালী পেপার, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, কে অ্যান্ড কিউ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমে ১০৪টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
প্রিন্ট করুন











Discussion about this post