Print Date & Time : 3 September 2025 Wednesday 9:26 pm

দরপতনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  দরপতনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। এ দিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।

ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৭ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬২০ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৬ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২২০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৩১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৪৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।

এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।

একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দরদাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি ফান্ড ও কোম্পানির দর।

‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর  মধ্যে ৪৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।

তবে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ছয়টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি ফান্ডের ইউনিট দর।

ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৩টি শেয়ার ও ইউনিট ৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৪ বার হাতবদল হয়েছে। এর জেরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৭৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৮১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার। ৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, আইটি কনসালট্যান্ট, রবি, ব্র্যাক ব্যাংক, অগ্নিসিস্টেম, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন এবং বিচ হ্যাচারি।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরে ধীরে উন্নতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে। বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বাজার আরও চাঙা হতে পারে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।