নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ বিষয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো কাজ করা হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। সক্ষমতার ভিত্তিতে আমাদের যা করণীয় চিঠিতে সেটা তুলে ধরা হয়েছে। এখন আমরা জবাব ও আমন্ত্রণের অপেক্ষায় আছি। এ বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডে কোনো স্থবিরতা নেই।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, এটা ব্যবসায়ীদের এখতিয়ার। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা অনলাইন মিটিংয়ের জন্য একটা শিডিউল চেয়েছি। এই মিটিংয়ের ওপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করব।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পদ্ধতি ও আইনি কাঠামোর কারণে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করা হচ্ছে না। এতে শুল্ক কমানোর সুযোগ নেই। দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেয়া হলেও এখনও আমন্ত্রণ পাওয়া যায়নি। আমন্ত্রণ পেলে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে।
এর আগে গত বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক আরোপ করেছে, সেটির হার কিছুটা কমানো হবে বলে আশা করছেন তিনি।
সাংবাদিকরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে তখন অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন, আমরা আশা করছি, হয়তো কিছু কমাবে। কারণ আমাদের ঘাটতি তো খুবই কম। ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি পণ্যেও বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা আগামী আগস্টের শুরুতেই কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এর মধ্যে বাড়তি শুল্ক কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যেই একাধিক বৈঠক হয়েছে। শেষ মুহূর্তের আলোচনায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কার্যকরের আর ৮ দিন বাকি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে (যুক্তরাষ্ট্র) যাবেন।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এক্ষেত্রে লবিস্ট নিয়োগের প্রসঙ্গ নেই। কারণ লম্বা সময় নিয়ে কোনো নেগোশিয়েশনের ক্ষেত্রে এ ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে দ্রুত করতে হবে। ওরা তো ঢুকতেই পারবে না, ওই অফিসের কাছাকাছি। নেগোশিয়েশন তো দূরের কথা।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ভালো ইমেজ আছে। সম্প্রতি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি, মেটলাইফের কতগুলো বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছি। বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ইউএস চেম্বার আমাকে চিঠি লিখেছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপর ৩৫ ভাগ বাড়তি শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে।