Print Date & Time : 18 July 2025 Friday 5:34 am

নরসিংদীতে প্রসূতির কাপড় রেখে সেলাই

প্রতিনিধি, নরসিংদী : নরসিংদীতে এক প্রসূতি মায়ের অস্ত্রোপচারের পর পেটের ভেতর ১৮ ইঞ্চি লম্বা এক টুকরা ‘মব’ কাপড় রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই জহিরুল ইসলাম নরসিংদী সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন সিভিল সার্জন।

ভুক্তভোগী প্রসূতি মোসা. লিমা আক্তার শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও মির্জাকান্দি এলাকার রহিম মিয়ার স্ত্রী। সংকটাপন্ন অবস্থায় লিমা আক্তার বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, প্রসব ব্যথা ওঠার পর গত ১৭ জুন লিমা আক্তারকে নরসিংদী পৌর এলাকার বাসাইল এলাকার নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকালে ডা. শিউলি আক্তাররের সফল অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে এক পুত্রসন্তানের জš§ দেন লিমা। এরপর ২১ জুন দুপুরে লিমা আক্তারকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। বাড়ি ফেরার পর তিনি পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ২৫ জুন লিমাকে ফের একই হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, কিন্তু সেখানে কিছুই ধরা পড়েনি। পরে তাকে নরসিংদীর অপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লিমাকে দ্রুত ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন এবং তার পেটে একটা কিছু রয়েছে বলে জানান। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হন লিমা আক্তারের পেটে কিছু একটা রয়েছে, যা অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে বের করতে হবে। এরপর গত ৩ জুলাই চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এইচ এম শাখাওয়াত হোসেন দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপাচার করে ওই নারীর পেট থেকে ১৮ ইঞ্চি আকৃতির একটি কাপড়ের টুকরো বের করেন। বর্তমানে ভুক্তভোগী নারী ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নরসিংদী সিটি হাসপাতালের এমডি রতন মিয়া বলেন, ঘটনাটি জানার পর রোগীর বাড়িতে গিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। তবে ভুল করে বিষয়টি হয়ে গেছে, সেটি তো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমরা রোগীর চিকিৎসার দায়িত্বও নেয়ার কথা বলেছি। রোগীর পরিবার সমঝোতায় আসতে চাচ্ছে না। নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. আমিরুল হক শামীম জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।