Print Date & Time : 26 August 2025 Tuesday 5:35 pm

নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্বীকৃতি ব্যাংক খাতের প্রতি আস্থা বাড়াবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই রেটিংয়ে ২০২৪ সালে সেরা ব্যাংক নির্বাচিত হয়েছে বেসরকারি খাতের দেশীয় মালিকানাধীন সিটি ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষে আইডিএলসি।

র্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে ২০২৪ সালে টেকসই রেটিংয়ে সেরা ব্যাংকের তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ব্র্যাক ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক। চতুর্থ থেকে দশম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টেকসই রেটিংয়ের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স। টেকসই রেটিংয়ে স্থান পাওয়া ১২ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। টেকসই খাতে অর্থায়ন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়ন, টেকসই কোর ব্যাংকিং, ব্যাংকিং সেবার পরিধি—এই পাঁচটি মূল সূচকের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই রেটিংয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে  কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা যায়, পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে টেকসই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিএলসি। এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফায়ও শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া নানা সূচকে এসব প্রতিষ্ঠান ঈর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে, যা তাদের টেকসই তালিকায় অবস্থান করে নিতে সহায়তা করেছে।

এবার প্রথমবারের টেকসই ব্যাংকের তালিকায় স্থান পেয়েছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক। আমরা আশা করি, আগামী বছর এ তালিকায় অন্য প্রতিষ্ঠান স্থান পাবে।  নিশ্চয়ই এ পুরস্কার ও সম্মাননা আমাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে গুণগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার দেয়ায় এটি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত পুরস্কারের চেয়ে বেশি মর্যাদা পাবে। এখানে পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান অনুদান নিয়ে এ পুরস্কার হাতিয়ে নেয়ার মতো সমালোচনা উঠবে না। মোটকথা, এ পুরস্কার সাফল্যেরই নয়, স্বীকৃতিরও বটে। বাণিজ্যিক ব্যাংক জনগণ বিশেষ করে আমানতকারীদের অর্থে ব্যবসা করে। বলা হয়ে থাকে, ব্যাংক ব্যবসা মানেই আস্থার বিষয়। বাস্তবতা হলো, ব্যাংক পরিচালনায় আমানতকারীদের কোনো ভূমিকা নেই। আমানতকারীদের কোনো ভূমিকা না থাকলে সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না; যদি স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার চর্চা থাকত। ব্যাংকগুলোর আর্থিক কেলেঙ্কারি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে ভরসা রাখতে পারছেন না আমানতকারীরা। তারা বরং তটস্থ থাকেন—কখন কী হয়ে যায়। এমন অনিশ্চয়তায় ধুঁকছে ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃতি গ্রাহকদের আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা।

আমরা মনে করি, ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও সুশাসন থাকলে ব্যাংকে কেলেংকারি হবে না, অর্থ পাচার হবে না, গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক উদ্যোগ নিলে ব্যাংক খাত অসাধু চক্রের কবজা থেকে বের করে আনা সম্ভব।