Print Date & Time : 12 August 2025 Tuesday 2:02 pm

নিয়ম মেনে টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রি হোক

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবারও ট্রাকে তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি শুরু করবে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার আবার মাসব্যাপী এ কার্যক্রম শুরু করছে সংস্থাটি। টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, স্মার্ট কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল, চিনি ও ডাল) বিক্রির কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি কার্ড নেই, এমন সাধারণ ভোক্তাদের কাছে ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কুমিল্লা মহানগরীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ১০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) এ বিক্রয় কার্যক্রম চলবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ছয়টি, কুমিল্লা মহানগরীতে তিনটি এবং ঢাকা জেলায় আটটি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় চারটি, পটুয়াখালী জেলায় পাঁচটি ও বাগেরহাট জেলায় পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি।

অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিকূল প্রভাব মোকাবিলা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার  ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জন্য যেসব সহায়তা কর্মসূচি নিয়েছে, তার মধ্যে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ সর্বাপেক্ষা জনবান্ধব। কিন্তু নানা অনিয়মে সুফল পায় না টার্গেট গ্রুপসহ সাধারণ মানুষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ‘ফ্যামিলি কার্ড’ প্রদানের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সক্ষমতা যাচাই করে যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি না থাকায় কর্মসূচিটি গ্রহণের ফলে বিভিন্ন পর্যায়ে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ছিল। এছাড়া স্বচ্ছতার ঘাটতি ও অনিয়ম-দুর্নীতিসহ পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতির ফলে একদিকে লক্ষিত উপকারভোগীদের বড় অংশ ফ্যামিলি কার্ড তালিকা থেকে বাদ পড়ে। আবার উপকারভোগীদের চাহিদা, পণ্য কেনার সামর্থ্য এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অভিগম্যতা ও অন্তর্ভুক্তির বিষয়গুলো যথাযথভাবে বিবেচনা না করায় দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে এই ইতিবাচক উদ্যোগের সুফল যথাযথভাবে পৌঁছায়নি, যা এই কর্মসূচির উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করেছে। তথ্য প্রকাশ ও প্রচারে ঘাটতি থাকার কারণে লক্ষিত উপকারভোগীদের উল্লেখযোগ্য অংশ এই কার্যক্রমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এর পাশাপাশি কর্মসূচিতে অভিযোগ নিরসন, পরিবীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। টিআইবিসহ অংশীজনদের গবেষণার ফল ও সুপারিশের আলোকে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা ‘ফ্যামিলি কার্ড’-সহ ভবিষ্যতে এমন জনকল্যাণমূলক অন্যান্য কর্মসূচিতে সুশাসন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।