শাহ মো. জিয়াউদ্দিন : বিক্ষোভ আন্দোলনের চরম পর্যায়ে কেপি শর্মা অলি সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। নেপালে বাংলাদেশের মতো জেন-জিরা সরকার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। জেন-জিদের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে। কিন্তু এই বল প্রয়োগেও অলির শেষ রক্ষা হয়নি। গণরোষের চরম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি দেশ ছেড়ে পালান। কেপি শর্ম অলি ২০১৪ সাল থেকে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) চেয়ারম্যান হন। আগে তিনি টানা দুবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, অক্টোবর ২০১৫ থেকে আগস্ট ২০১৬ এবং ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে জুলাই ২০২১ পর্যন্ত। তিনি ২০১৭ সাল থেকে ঝাপা ৫-এর সংসদ সদস্য। তিনি পূর্বে ঝাপা ৬, ঝাপা ২ এবং ঝাপা ৭-এর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অলি ২০১৫ সালে নেপালের ওপর ভারতের অবরোধের বিরোধিতা করেছিলেন। ভারতের সঙ্গে নেপালের ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকল্প হিসেবে তিনি চীনের সক্সেগ জোরদার করেছিলেন সম্পর্ক। ঘন ঘন অশ্লীল মন্তব্য, সমালোচক এবং মিডিয়ার প্রতি শত্রুতা এবং স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিকে উৎসাহিত করার অভিযোগের জন্য অলির ক্ষমতার মেয়াদ বিতর্কিত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে এ পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে নেপালে। তবে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেও এখনও ক্ষোভ প্রশমনের কোনো লক্ষ্মণ দেখা যায়নি দেশটিতে। নেপালজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ভবনগুলোয় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। ভক্তপুরের বালাকোটে পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার বাড়িতেও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।
নেপালে সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৫ সালে সংবিধান ঘোষণার পর এটি ছিল দ্বিতীয় নির্বাচন। সেই সময়ে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি-মাওবাদী সেন্টার (সিপিএন-এমসি) নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি-ইউনিফাইড-মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্টের (সিপিএন-ইউএমএল) সঙ্গে একটি জোট সরকার গঠন করে, যদিও নেপাল কংগ্রেস (এনসি) বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারপর ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ক্ষমতায় থাকা সিপিএন-ইউএমএল এবং এনসি-নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে চার দফায় জোটগত কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে এবং পাশাপাশি সম্ভাব্য সরকার পরিবর্তনের গুজবও উঠেছে। এটি একটি অস্থির অভ্যন্তরীণ আবহকেই প্রকট করে দিয়েছিল। ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ তিনকুনে সহিংস বিক্ষোভের পরের পরিস্থিতি থেকে নেপাল যতটা সম্ভব বিরত থাকার চেষ্টা করছে। ওই বিক্ষোভে দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ২০২৬ সালে নেপাল যখন ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ২০২৭ সালে দেশটিতে আর একটি সাধারণ নির্বাচন হবে। তবে বর্তমান সংকটাপন্ন অবস্থায় নির্বাচনটা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ অলি সরকারকে দেশের মানুষ জানে স্বৈরাচারী, গণবিরোধী ও দুর্নীতিগ্রস্ত। নিজেকে রক্ষার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল তা ছিল সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক; তাই সরকারবিরোধী আন্দোলন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল এবং সরকারের জনপ্রিয়তা চলে আসে শূন্যের কোটায়।
কীভাবে পতন ঘটানো হয় অলি সরকারেরÑনেপালের একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, তরুণদের এই নবজাগরণের নেপথ্যে রয়েছেন ছত্রিশ বছর বয়সী এক তরুণ নেতা সুদান গুরুং। ২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। সেই সময় নিজের সন্তানকে হারান সুদান। এরপরই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘হামি নেপাল’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে প্রান্তিক নেপালের জন্য কাজ শুরু করেন তিনি। মূলত ছাত্র-যুবদের দ্বারা পরিচালিত হয় এই সংগঠন। ২০১৫ সালের পর ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবিলার কাজে নিজেকে যুক্ত করেন সুদান। ধীরে ধীরে নেপালের ছাত্র-যুবদের কাছে হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় মুখ। পরে বিপি কৈরালা ইনস্টিটিউটে দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন সুদান। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের পেছনে কাজ করেছে সুপরিকল্পিত ও ধাপে ধাপে সংগঠিত এক আন্দোলন। আন্দোলন সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন সুদান। তার গৃহীত চার কৌশলী পদক্ষেপই আন্দোলনকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। প্রথম ধাপে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বিকল্প মেসেজিং অ্যাপ, ভিপিএন এবং সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যমে বার্তা ছড়ানো হয়। হামি দলের স্বেচ্ছাসেবীরা রাতজুড়ে ফোন কল, হ্যান্ডবিল ও পোস্টারের মাধ্যমে বিক্ষোভের বিস্তারিত তথ্য জানান। দ্বিতীয় ধাপে প্রতীকী প্রতিবাদের কৌশল নেয়া হয়। তরুণদের স্কুল ইউনিফর্ম পরে বই হাতে রাস্তায় নামতে বলা হয়। এই চিত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা বিশ্বজনমত তৈরিতে সাহায্য করে। তৃতীয় ধাপে ক্ষেত্র পর্যায়ে সমন্বয় করা হয়। প্রতিটি শহরে স্থানীয় সমন্বয়ক নিয়োগ দেয়া হয়। তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণ, মিডিয়া যোগাযোগ এবং পুলিশি বাধা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকেন। আহতদের দ্রুত সেবা দিতে চিকিৎসা ব্যবস্থাও রাখা হয় আন্দোলনের অংশ হিসেবে। চতুর্থ ধাপে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পুনরায় চালুর দাবির পাশাপাশি সরাসরি সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়। এই সংগঠিত আন্দোলন দুদিনের মাথায় সরকারকে চাপে ফেলে। রাজধানী থেকে প্রদেশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ, আন্তর্জাতিক চাপ ও জনসমর্থনের মুখে প্রধানমন্ত্রী অলি পদত্যাগে বাধ্য হন। সরকার পতনের পর সুদান গুরুং আন্দোলনকারীদের শান্ত থাকতে, সহিংসতা এড়াতে এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। তার মতে, এটি নেপালের জন্য এক নতুন সূচনা, যা দেশকে দুর্নীতি ও অকার্যকর সরকারব্যবস্থা থেকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসনের দিকে নিয়ে যাবে।
তাছাড়া জেন-জিদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ভাঙনের মুখে পড়েছিল ক্ষমতাসীন জোট সরকার। দেশটির সংসদের ২৭৫ আসনের মধ্যে ৮৯ আসনের দখল রয়েছে নেপালি কংগ্রেস পার্টির। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা শেখর কৈরালা তার সমর্থকদের সরকার থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। মাওবাদী সেন্টারের ৩২ আসন রয়েছে। তারাও জোট সরকার থেকে সরে যায়। এছাড়া জনতা সমাজবাদী পার্টিসহ অন্যান্য কয়েকটি ছোট দলও সরকার থেকে বেরিয়ে যায়। সংসদে এসব দলের প্রায় ১০টি আসন ছিল। পাশাপাশি ন্যাশনাল ইনডিপেন্ডেন্ট পার্টির (এনআইএসপি) ২১ জন এমপি একসঙ্গে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। এ দলটি বিক্ষোভের কট্টর সমর্থক এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে দেশে নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়।
নেপালের অর্থনীতিতে দেখা দেয় চরম বিপর্যয়। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, নেপালের অর্থনীতি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৪.৫ শতাংশ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ৫.২ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হয়েছিল কিন্তু তা পূরণ হয়নি। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) পূর্ণাঙ্গ বৈঠকের সময় নেপালকে দ্বিতীয়বারের মতো (প্রাথমিকভাবে ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত) ধূসর তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এর অর্থ হলো অর্থ পাচার ও অন্যান্য আর্থিক অপরাধ কার্যকরভাবে রোধ করতে ব্যর্থতার জন্য এবং সমবায় ও রিয়েল এস্টেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য দেশটিকে আরও তদন্তের আওতায় আনা হবে। যে দেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যে চাপের মধ্যে রয়েছে, ধূসর তালিকাভুক্তি বিনিয়োগ আকর্ষণে নিঃসন্দেহে অতিরিক্ত বাধা তৈরি করবে। তাই দেখা যায়, তরুণরা উন্নত সুযোগের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে, বিদেশে বসবাসকারী নেপালিরা এখন দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্নীতি কেলেঙ্কারি নেপালের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভুটানি শরণার্থী কেলেঙ্কারি, ললিত-নিবাস কেলেঙ্কারি, সমবায় ও সোনা চোরাচালান কেলেঙ্কারি। ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ২৪ শতাংশ অবদান রেখেছে, যদিও একই সময়কালে দক্ষিণ এশিয়ার গড় ৪ শতাংশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের দৃষ্টিকোণ থেকেও দেশটি ঝুঁকিপূর্ণ, গত বছর বন্যায় জিডিপির ০.৮ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
মার্চ মাস থেকে চলতে থাকা রাজতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ এখন তুলনামূলকভাবে স্তিমিত হয়ে এলেও স্কুল শিক্ষা বিল পাসের জন্য শিক্ষকদের একযোগে বিক্ষোভÑযার ফলে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ করেন। ক্রমবর্ধমান সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ, নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং জ্বালানি ও জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী পূর্ণ বাহাদুর তামাংকে বরখাস্ত করা। এসব কিছুই সরকারের ক্ষমতা প্রদর্শনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগে বিলম্বও সম্ভাব্য বিরোধের বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়। মন্ত্রীদের বিলাসবহুল জীবনযাপন করার জন্য তারা হয়ে উঠে দুর্নীগ্রস্ত। দেশের প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করে দুর্নীতি। এখানে প্রশ্ন হলো, একটি কমিউনিস্ট সরকার কেন দুর্নীতিগ্রস্ত হবে? তাছাড়া মার্কসবাদ একটি আধুনিক এবং বিজ্ঞানসম্মত মতবাদ, এই মতবাদে বিশ্বাসীদের প্ল্যাটফরম থেকে কেন তরুণরা দূরে সরে যাবে? এই ব্যর্থতার দায় কার? যারা বাম রাজনীতি করেন তারা হয় তর্কের খাতিরে তর্ক জুড়ে দিয়ে বলবেন, সাম্রাজ্যবাদ, সিআইয়ের এজেন্টরা এই কাজ করেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে যদি তাদের প্রশ্ন করা হয়, কীভাবে সিআইএর এজেন্ট, পুঁজিবাদী গোষ্ঠী ও সাম্রাজ্যবাদীরা কি ইস্যুর ভিত্তিতে জনমতকে সংগঠিত করে? যদি নেপালি কমিউনিস্টদের দোষ না থাকে। নেপালের সরকারপ্রধান কমিউনিস্ট ছিলেন নাকি ক্ষমতায় থাকার জন্য কমিউনিস্টকে ব্যবহার করেছেন এটা এখন বড় প্রশ্ন। কারণ মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে কমিউনিস্ট পার্টি। এই পার্টির মূল লক্ষ্য হলো একটি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকবে না এবং উৎপাদনের উপকরণগুলোয় সমাজের সবার মালিকানায় থাকবে। কিন্তু নেপালে ব্যক্তিরা অর্থাৎ শাসক শ্রেণিরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে। জনগণ থাকে অনাহারে-অর্ধাহারে। তাহলে এরা কী করে কমিউনিস্ট হয়?
বামপন্থি দলগুলো হয়ে উঠছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। তাই তাদের নেপালের পতন থেকে শিক্ষা নেয়া দরকার। দেখা যায়, কমিউনিস্ট পার্টি গণমানুষের দল হিসেবে গণমানুষ দিয়ে সংগঠিত হওয়ার পরিবর্তে সংগঠিত হচ্ছে ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে। বাংলাদেশে বামপন্থিরা এই কাজটি বেশি করছেন। কমিউনিস্ট পার্টিতে গণমানুষকে পার্টির সদস্য পদ দেয়া হয় না। নেতার তোয়াজ করা ব্যক্তিদের পার্টির অন্তর্ভুক্তি করা হয়। বাংলাদেশের একটি জেলায় দেখা গেছে, মৌলবাদের সমর্থক কমিউনিস্ট সদস্য পদ লাভ করেছেন। এখানে প্রশ্ন জাগে কমিউনিস্ট পার্টিতে প্রকৃতার্থে কি মার্কসের আদর্শে আছে? নাকি মৌলবাদ সমর্থক, অর্থ আত্মসাৎকারী এই ধরনের লোকদের সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। গণমানুষের মাঝ থেকে উঠে আসা ব্যক্তিদের সদস্য করা হয় না। এ রকম করার কারণ হচ্ছে গণমানুষ সদস্য হলে মাতব্বরিটা থাকবে না। তাই সে দলকে ক্ষুদ্র রাখতে চায় মানুষের মধ্য থেকে পার্টির সদস্য পদ পেলে পার্টির বিস্তার ঘটবে। আর এই বিস্তারের ফলে অলস অসংগঠক, পদধারীর নেতার পদটি বাদ হয়ে যাবে। পার্টিকে কুক্ষিগত করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করেন বাম নেতারা। তাই দেখা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কখনোই বামপন্থিরা একটি অবস্থান তৈরি করতে পারবে না। যার নিদর্শন ডাকসুর নির্বাচন। অথচ হাসিনা পতনের আন্দোলনে বামপন্থিদের ভূমিকাটা ছিল।
সুতরাং নেপালের বিপর্যয় থেকে বামপন্থিদের শিক্ষা নেয়া দরকার। পুঁজিবাদ সিআইয়ের এজেন্ট ইত্যাদি গালাগাল না করে নিজের চেহারাটা একবার আয়নায় দেখুন। ব্যক্তি পূজারি সৃষ্টি না করে সমাজের চাহিদাভিত্তিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার কাজ করুন। দেখবেন পার্টিতে মানুষ ভিড় করছে আর অধিকার আদায়ের আওয়াজ তুলছে। আর নইলে নিজেরা ঘোর তমসার ডুবে যাবেন। তখন আর বামপন্থিদের বাইনো কোলার দিয়ে খুঁজেও পাওয়া যাবে না।
উন্নয়ন কর্মী, মুক্ত লেখক
কাদিরগঞ্জ দরিখোরবোনা, রাজশাহী

Discussion about this post