নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দরপতনের পর ঊর্ধ্বমুখী ছিল দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪১৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৮৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৫ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৪০০টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৯৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে ৬৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৩১টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি ফান্ড ও কোম্পানির দরদাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে ১১টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে সাতটি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৯ কোটি ৯১ লাখ ৮৫ হাজার ২১০টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ৬৬ হাজার ৯৩০ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৯৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার। ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, টেকনো ড্রাগস, যমুনা ব্যাংক, মালেক স্পিনিং, একমি পেস্টিসাইড, মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।