Print Date & Time : 16 November 2025 Sunday 7:21 pm

পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণে পাশে আছে ইউএস-বাংলা

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ধন-সম্পদ থাকলেই যেমন লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না তেমনি অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীও পর্যাপ্ত মেধা থাকা সত্ত্বেও সুযোগের অভাবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছাতে পারে না। উড়ার ইচ্ছে অনেকের আছে কিন্তু উড়তে পারছে ক’জন? শৈশব কালে বাচ্চাদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও? কয়েকটি কমন উত্তরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি হচ্ছে- কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার আবার কেউ পাইলট হতে চায়। মেধাবী হলেই সরকারের শিক্ষানীতির কারনে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পথটা কিছুটা সুগম হয়। কিন্তু পাইলট? মেধাবী হলেই হয়ে উঠে না। সাথে প্রয়োজন অর্থ ও সামর্থ্যের। পর্যাপ্ত অর্থ-বিত্ত না থাকার কারনে অনেক মেধাবীর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন, দূঃস্বপ্ন হয়েই থেকে যায়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী এয়ারলাইন্স। আজ প্রায় ১২ বছর অতিক্রম করতে চলেছে আকাশ পরিবহন ব্যবসায়। শুরু থেকে একটি অন্যতম সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে নানাবিধ কাজ ছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে পাইলট সংকটে পতিত হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব বিমানসংস্থা। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স পরিকল্পনামাফিক মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাইলট তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুইটি ড্যাশ-৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বিমান বহরে বর্তমানে তিনটি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ সহ মোট ২৫টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। খুব শীঘ্রই বহরে আরো অধিক সংখ্যক এয়াক্রাফট যুক্ত করতে চলেছে ইউএস-বাংলা। যেকোনো বিমানসংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সাথে সাথে অতিরিক্ত পাইলটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় কিন্তু তা সহজেই স্বল্পতম সময়ে পূরণ করা যায় না। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যপ্তি ঘটানোর পূর্বেই পাইলট নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইন্সের পরিকল্পনারই অংশ।

অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২২ সালের শুরুতে স্টুডেন্ট পাইলট ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় হিউম্যান রিসোর্স এর বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে নানাবিধ পরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে বাছাই করে থাকে।

ইতিমধ্যে ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডায় এপিক ফ্লাইট একাডেমীতে ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আরো ৫ জন প্রশিক্ষণার্থী খুব শীঘ্রই কোর্স শেষ করে ইউএস-বাংলায় যোগদানের অপেক্ষায় আছে। ধারাবাহিকভাবে পাইলট ট্রেনিং কোর্স করার জন্য ৭ জন অপেক্ষমান। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন এ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএ সিপিএল) প্রাপ্ত হন প্রশিক্ষণার্থীরা।

একই প্রক্রিয়ায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর অর্থায়নে মেধাবীদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করার পর পরবর্তী ক্যাডেট পাইলট তৈরীর লক্ষ্যে আবেদনপত্র সংগ্রহ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

যে সকল মেধাবী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ দশমিক ০০ প্রাপ্ত হলে আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। পদার্থ বিজ্ঞান, সাধারণ ও উচ্চতর গনিত তিনটি বিষয়ের মধ্যে নূন্যতম দু’টি বিষয়ে জিপিএ ৫ দশমিক ০০ এবং একটি বিষয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ০০ এবং ইংরেজীতে জিপিএ ৪ দশমিক ০০সহ এসএসসি এবং এইচএসসি-তে গনিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে জিপিএ ৫ দশমিক ০০ ও ইংরেজীতে জিপিএ ৪ দশমিক ০০ প্রাপ্ত হলে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ‘ও’ লেভেলে পদার্থ ও গনিতসহ ৫ (পাঁচ) বিষয়ে গ্রেড-এ এবং এবং‘এ’ লেভেলে গনিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে গ্রেড-বি পেয়েছেন শুধুমাত্র সেসকল শিক্ষার্থীরাই আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। জিইডি কে একাডেমিক যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। ইংরেজীতে সকল আবেদনকারীকে দক্ষ হতে হবে।

ক্যাডেট পাইলটদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা (ইংরেজী, গনিত ও পদার্থ বিজ্ঞান), পাইলট যোগ্যতা পরীক্ষা, সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষা। সকল টেস্টে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর যেকোনো দেশে ফ্লাইট ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদী প্রশিক্ষণ সাফল্যের সাথে সম্পন্নের পর উত্তীর্ণ ক্যাডেট পাইলটগণ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে যোগদান করতে পারবেন।

আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশী হতে হবে এবং অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে পারবে না। আবেদনের সময় বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২২ বছর। উচ্চতা পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৬৮ সেন্টিমিটার (৫ফুট ৬ইঞ্চি) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬৪ সেন্টিমিটার (৫ফুট ৪ ইঞ্চি) হতে হবে। প্রার্থীর ওজন হতে হবে বিএমআই এর উচ্চতার আনুপাতিক হারে। প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি হতে হবে ৬/৬। অধুমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। যেকোনো ধরনের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ থেকে ক্লাস-১ মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।

ক্যাডেট পাইলট এর যোগ্যতা নির্ধারণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স উপরোক্ত শর্তাবলীর পরিবর্তন কিংবা পরিমার্জন করার অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে। ক্যাডেট পাইলটের এর মতো এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আবেদন করার জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট ভিজিট করার অনুরোধ করা গেল। আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৫।

এস এস/