যশোরে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। পাট ও পাটকাঠিÑদুটির দামই ভালো। তাতে বেজায় খুশি জেলার কৃষকেরা। গতকাল একটি সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাতেই খুশি কৃষক। গত তিন বছরের পরিসংখ্যান দিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, যশোরে গত বছর পাটের আবাদ কিছুটা কমেছিল। এবার আবার আবাদ বেড়েছে।
সোনালি আঁশের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। আর এসব বসবাসকারীর জীবনধারণের একমাত্র উৎস হলো কৃষিকাজ। এই কৃষিকাজের মাধ্যমে তারা জীবন পরিচালনা করে। আর এই কৃষিকাজে নানারকম পণ্য উৎপাদন করে কৃষকরা। এসব পণ্যের মধ্যে অন্যতম এক পণ্যের নাম হলো পাট। কারণ একসময় বাংলাদেশের পাটের প্রধান ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন ধনী দেশ। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ প্লাস্টিকের ব্যাপকতা দেখতে পাওয়া যায়। এর কারণ হচ্ছে, পাটের চাষ কমে যাওয়া এবং সরকারের সুদৃষ্টির অভাব।
পাটের যৌক্তিক দাম পেলে এক কোটি চাষি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখবে। এই পাট দিয়ে ব্যাগ, পার্টস, জুতা, শতরঞ্জি, শিখা, পাপোশ, টুপি, মানিব্যাগ, কম্বল ইত্যাদি তৈরি হয়। উল্লিখিত এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এখন সরকার পাটকলগুলো বন্ধ করে দেয়ার কারণে এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া দেশের শিল্পে এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। করোনার কারণে নতুন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে এক অশুভ প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া করোনার কারণে অন্য শিল্পের ক্ষতি হলেও পাটশিল্পের কোনো ক্ষতি হয়নি। পাটের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ চাহিদা পূরণ করতে পারে বাংলাদেশ, কারণ প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশ আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের একচেটিয়া রপ্তানিকারক ছিল। তাই বাংলাদেশের উচিত হবে পাটজাত দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এ লক্ষ্যে কৃষকদের উৎসাহ জোগাতে হবে। সরকার বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেবে বলেই প্রত্যাশা।