নিজস্ব প্রতিবেদক : পাটের ব্যাগ বানালে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ বহুলাংশে বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল রোববার তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, পলিথিনের চেয়ে পাটের ব্যাগ তৈরিতে বেশি কর্মসংস্থান হবে। এতদিন যারা প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরি করত, এখন থেকে তারা পাটের ব্যাগ বানাবে। এতে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ কমবে না, বরং বহুলাংশে বাড়বে।
শেখ বশির উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিকের ব্যাগের চেয়ে পাটের ব্যাগ তৈরিতে অনেক বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়াটি একটি স্বয়ংক্রিয় মেশিননির্ভর, যেখানে কর্মসংস্থান তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু পাটের ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়াটি হাতে করা হয়, ফলে এখানে বহুগুণ বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য পাট ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, যেসব শিল্প উদ্যোক্তা পাটের সুতা ও কাপড় তৈরি করবেন এবং তা দিয়ে ব্যাগ বানাবেন, তাদের উৎসাহিত করা উচিত। তিনি চান ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক, যা একদিকে পরিবেশ রক্ষা করবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ কয়েক বিলিয়ন ডলারের প্লাস্টিক পণ্য আমদানি করে, অথচ পাটপণ্য রপ্তানি হয় এক বিলিয়ন ডলারেরও কম। আমরা কাঁচা পাট বেশি রপ্তানি করছি, কিন্তু পাটপণ্য কম। স্থানীয় সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার কারণে আমরা পাটের ঐতিহ্য হারিয়েছি। পরিবেশ ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।
ব্যক্তিগতভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা পাটের ব্যাগ ছাড়া আর কোনো ব্যাগ ব্যবহার করব না। সরকার পাটের ব্যাগের ব্যবহার সহজলভ্য করতে কিছু সময় দেবে, কিন্তু তারপরও যদি কেউ সরকারি আইন না মানে, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আশা করেন, সবাই মিলে এই উদ্যোগকে সফল করবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা প্রমুখ।

Discussion about this post