Print Date & Time : 6 September 2025 Saturday 12:15 pm

পুঁজিবাজারে আজীবন নিষিদ্ধ সালমান-সায়ান-শিবলী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ড আল ইসতানিয়া ও আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো ক্যুপন বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে অনিয়ম, প্রভাব খাটানো, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দায়িত্বশীল আচরণ না করার অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টের সাবেক সিইও ইমরান আহমেদকে পাঁচ বছর পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা, আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা ও ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিংকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত পৃথক আদেশ জারি বুধবার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর আগে গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৯৬৫তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএসইসির আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ও বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ড আল ইসতানিয়া ইস্যুর ক্ষেত্রে ‘প্রতারণামূলক যোগসাজশ’ হয়েছিল। সালমান এফ রহমান তার প্রভাব খাটিয়ে এই প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। তার কর্মকাণ্ড ছিল অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দেশের পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

বিএসইসির মতে, বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ও মূলধন বাজারের সুষ্ঠু বিকাশে তার এ কর্মকাণ্ড মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। এজন্য তাকে আজীবনের জন্য সিকিউরিটিজ বাজার থেকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ও বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ড আল ইসতানিয়া ইস্যুর ক্ষেত্রে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম যথাযথ দায়িত্বশীল আচরণ না করে পুরো প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, বিধি লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসি একটি তদন্ত ও অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল। তদন্ত কমিটি কর্তৃক এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনের আলোকেই কমিশন আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমানকে ১০০ কোটি ও ব্যাংকের তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার এবং পুঁজিবাজারে উভয়কে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

একই সঙ্গে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার এবং তৎকালীন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের তৎকালীন সিইও ইমরান আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব ধরনের কাজে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে অ্যানফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক এ আর এম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং তৎকালীন স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।