নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : আবারও পতনের মুখে পড়েছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক এক পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক এক পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১০৬০ ও ১৮১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৪০০টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৩০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২০৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর
মধ্যে মাত্র ৭২ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৯ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৩৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র পাঁচটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৯টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১২টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৮ কোটি ২২ লাখ ৭৬ হাজার ৭১০টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৪৩ হাজার ২৬৪ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৪৬৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২২৯টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ৪০টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ২৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতন এবং বেশির ভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি কেমন থাকে, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।

Discussion about this post