নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও পতনের মুখে পড়েছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও
কিছুটা কমেছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
টানা ৯ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের পুঁজিবাজারে এই দরপতন হয়েছে। এদিন বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৭ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩১ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৯টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৩০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৫০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল দুটি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র চারটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৩ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬৭টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫২১ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৮৬৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২৪৭টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮১টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৪২টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ২৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৫৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতন এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি কেমন থাকে, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাজার-সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।

Discussion about this post