পোলট্রি ও ডেইরি খাত আমাদের অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাত। প্রান্তিক পর্যায়ে হ্যাচারি ও খামারের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান তথা স্বাবলম্বী হচ্ছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। দুর্ভাগ্যজনক হলো, নানা কারণে এ খাতে দুঃসময় যাচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, মুরগি, হাঁসসহ নানা ধরনের প্রাণিসম্পদের সংখ্যা ৪৫ কোটির বেশি। গরু, মহিষ, হাঁস-মুরগিসহ প্রাণিখাদ্যের জন্য দেশে গড়ে উঠেছে ফিডমিল বা প্রাণিখাদ্য উৎপাদন কারখানা। তাতে আমদানিনির্ভর এ খাতটি এখন স্থানীয় ভুট্টার ওপর ভর করে দেশি শিল্পে পরিণত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টদের তরফে জানা যায়, দেশে ফিডের বাজার এখন প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার। আবার ফিডশিল্পের চাহিদার ওপর ভর করে দেশে ভুট্টার উৎপাদনও বাড়ছে। পোলট্রি ও ডেইরি খাতের দ্রুত বিকাশ এই শিল্পকে গতিশীল করেছে।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মুরগি ও ডিমের দাম কমে যাওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক খামারি লোকসান করছেন। তাতে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় টিকে থাকতে ফিডমিলের দাম স্থিতিশীল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামের প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনো গৃহপালিত পশু পালনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের পশু পালনের মোট খরচের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ খাদ্যের পেছনে ব্যয় হয়। ফিডমিলের উচ্চ মূল্যে তারাও বিপাকে পড়েছে। প্রাণিখাদ্যের বাজার বড় উৎপাদনকারী নারিশ পোলট্রি, এসিআই গোদরেজ, আরআরপি অ্যাগ্রো, প্যারাগন, কাজী ফার্মস, সিপি বাংলাদেশ, কোয়ালিটি, আকিজ ফিডস প্রভৃতির দখলে। এসব প্রতিষ্ঠান সংঘবদ্ধভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রান্তিক খামারি ও তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় ধরে রাখতে সব অংশীজনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে সঙ্গে নিলে এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে।

Discussion about this post