নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিএসইজেড) থেকে প্রথমবারের মতো ইউরোপে ‘হারনেস’ পণ্য রপ্তানি শুরু করেছে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। এতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উšে§াচিত হলো। দেশের গার্হস্থ্য যন্ত্রপাতি খাতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ-জাপান যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জিটুজি-ভিত্তিক এই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম চালান রপ্তানি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও বেজা’র নির্বাহী সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) সালেহ আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুস্তাফিজুর রহমান এবং সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এইচ এম ফাইরোজ।
প্রথম চালানে রপ্তানি করা হচ্ছে ‘ওয়্যার হারনেস’, যা পাঠানো হবে রোমানিয়ার উলমিতে অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্র্যান্ড বেকো’র ওয়াশিং মেশিন ফ্যাক্টরিতে। এর মাধ্যমে সিঙ্গার বাংলাদেশের পণ্য বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে এবং একে কেন্দ্র করে রপ্তানি বহুমুখী করা নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সিঙ্গার বাংলাদেশের এমডি ও সিইও এম এইচ এম ফাইরোজ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে বৈশ্বিক মানচিত্রে একটি নির্ভরযোগ্য উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, রপ্তানি বৈচিত্র্য এবং শিল্প উৎকর্ষে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বেজা’র নির্বাহী সদস্য সালেহ আহমেদ বলেন, ‘অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে। এই রপ্তানি একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে। দিনটি বেজার জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন, যা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বাড়াবে।’
সিঙ্গার বাংলাদেশের ফ্যাক্টরি ডিরেক্টর হাকান আলতিনিশিক বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট ও সূক্ষ্ম পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে এটি দেশের জন্য একটি বড় অর্জন। আমরা এখন শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে বৈচিত্র্যময় কম্পোনেন্ট সরবরাহ করছি।’
উল্লেখ্য, মাত্র ১৮ মাসে নির্মিত এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আট মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করা সিঙ্গার বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স কারখানাটি আন্তর্জাতিক পরিবেশ মানদণ্ড লিড গোল্ড অনুযায়ী নির্মিত একটি পরিবেশবান্ধব কারখানা। এতে এখন পর্যন্ত ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। বর্তমানে এ কারখানায় ওয়্যার হারনেস ছাড়া রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার এবং ওয়াশিং মেশিন উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠাটির সূত্রে জানা গেছে, আগামীতে রোমানিয়া, তুরস্ক, সেøাভাকিয়া, পোল্যান্ড ও ইতালিÑএই পাঁচ দেশে নিয়মিত পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। এসব পণ্য মূলত বেকো ব্র্যান্ডের আওতাভুক্ত ১৪টি বৈশ্বিক কারখানায় সরবরাহ করা হবে।
২০২৬ সালের মধ্যে কারখানাটিতে প্রায় এক হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

Discussion about this post