শেয়ার বিজ ডেস্ক : প্লাস্টিকদূষণ মোকাবিলায় ঐতিহাসিক চুক্তি করার লক্ষ্যে হওয়া বৈঠক গতকাল শুক্রবার কোনো সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। শেষ মুহূর্তে প্রস্তাবিত সমাধান নিয়েও ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
১৮৫টি দেশের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনায় অংশ নেন। একপক্ষ যেখানে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক ধীরে ধীরে বন্ধের মতো সাহসী পদক্ষেপ চেয়েছে, সেখানে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো চেয়েছে চুক্তিটি শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর সীমিত থাকুক।
গত ৫ আগস্ট শুরু হওয়া জেনেভায় জাতিসংঘ আয়োজিত এ আলোচনা বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও চুক্তি হয়নি।
নরওয়ের আলোচক বলেন, আমরা এখানে জেনেভায় প্লাস্টিকদূষণ বন্ধের কোনো চুক্তি করতে পারিনি।
কিউবার প্রতিনিধি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হারিয়েছি, তবে আমাদের চালিয়ে যেতে হবে এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। পৃথিবী ও বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ চুক্তি অত্যন্ত প্রয়োজন।
পালাউ ৩৯টি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলে হতাশা প্রকাশ করে জানায়, প্রতিবার বিপুল সম্পদ ও জনবল বিনিয়োগ করেও ঘরে ফিরতে হচ্ছে খুব সামান্য অগ্রগতি নিয়ে। আমরা এই বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটে খুব সামান্য অবদান রাখলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, যা অন্যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ চেয়েছিল প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো ও প্লাস্টিকে ব্যবহূত বিষাক্ত রাসায়নিক ধাপে ধাপে বন্ধ করার স্পষ্ট ভাষা চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হোক।
অন্যদিকে সৌদি আরব, কুয়েত, রাশিয়া, ইরান ও মালয়েশিয়াসহ বেশিরভাগ তেল উৎপাদনকারী দেশ চেয়েছে চুক্তির পরিধি সীমিত রাখতে। কুয়েতের প্রতিনিধি বলেন, আমাদের মতামত প্রতিফলিত হয়ন, নির্ধারিত পরিধি ছাড়া এই প্রক্রিয়া সঠিক পথে থাকতে পারবে না এবং তা বিপজ্জনক দিকে গড়াতে পারে।
প্রতি বছর বিশ্বে ৪০০ মিলিয়ন টনের বেশি প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, যার অর্ধেকই একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্যের জন্য। উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যের মাত্র ১৫ শতাংশ পুনর্ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করা হয়, আর কার্যত মাত্র ৯ শতাংশ পুনর্ব্যবহার হয়। প্রায় ৪৬ শতাংশ ফেলে দেয়া হয় ডাম্পে, ১৭ শতাংশ পুড়িয়ে ফেলা হয়, আর ২২ শতাংশ অযত্নে ফেলে রেখে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।

Discussion about this post