প্রতিনিধি, ফরিদপুর : ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বাটিকামারী বিলে মাছচাষ এবং এক পক্ষের মাছ ধরাকে কেন্দ করে স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে যে কোনো সময় সামাজিক সম্পর্কের অবনতি এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, কয়েক দশক ধরে বাটিকামারী বিলের জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি বন্দোবস্ত নিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছচাষ করে আসছিলেন তিনি। বিভিন্ন কারণে মাঝে কয়েক বছর তিনি মাছচাষ থেকে বিরত থাকেন, কিন্তু চলতি বছরে ভূমির মালিকদের অনুরোধে জলা (পানি) বিস্তৃত প্রায় ২২ একর জমির মধ্যে প্রায় সবার কাছ থেকেই জমি বন্দোবস্ত নিয়ে মাছ চাষের উদ্দেশ্যে মাছ ছাড়া হয়। মাছগুলো প্রায় এক কেজি সাইজের হয়ে গেছে। ওই বিলে সরকারি কোনো জনি নেই বলেও জানান তিনি। তিনি আরও জানান, চালাকি করে রাজন মিয়াসহ হাতে গোনা কয়েকজন হীনউদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষে কয়েকজনের সামান্য পরিমাণ জমি বন্দোবস্ত দেয়নি। তারা স্থানীয় কিছু লোভী মানুষকে সংগঠিত করে ওই বিল থেকে গত কয়েক দিন ধরে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে তিনি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ বিষয়ে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করলে তা আমলে না নেয়ায় পরে আদালতে ২৮ জুলাই অভিযোগ দাখিল করেন।
তিনি দাবি করেন, তিনি (মোস্তফা) বিএনপির সমর্থক হওয়ায় কৃষ্ণনগর আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা বিশ্বাস ও তার ছেলে বাবুল বিশ্বাসের মদতে তারা বিল থেকে প্রতিদিন মাছ লুট করছে। গত কয়েকদিনে প্রায় ১০ থেকে ১২ মণ মাছ লুট হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি (মোস্তফা) আরো দাবি করেন, ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তার (মোস্তফা) কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বাদশা বিশ্বাস ও তার ছেলে বাবুল মোল্লা। সম্প্র্রতি মাছচাষ করার ইস্যুতে ফের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলেও তা না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে মাছ লুট করিয়ে দিচ্ছেন তারা। এ ঘটনায় তিনি সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে মাছ ধরার কথা স্বীকার করে
রাজন মিয়া জানান, আমরা কাউকে আমাদের জমি বন্দোবস্ত দেইনি। কয়েক মাস আগে
আমরা জমিতে পানি জমলে মাছ ছেড়ে ছিলাম। এখন মাছ বড় হয়েছে তাই আমরা আমাদের জায়গা থেকেই মাছ শিকার করছি। তিনি আরও বলেন সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বিলের কয়েকজনের থেকে জমি বন্দোবস্ত নিয়ে মাছ ছেড়ে পুরো বিলের জমির পানির মাছ নিজের দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে অন্যায়ভাবে।
আর বর্তমান চেয়ারম্যান বাদশা বিশ্বাসের ছেলে বাবুল বিশ্বাস তাদের বিরুদ্ধে আনা সব
অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এসব ঘটনার সঙ্গে তার এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের বাদশা বিশ্বাসের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, উভয় পক্ষের থেকেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।