শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইন থেকে আমদানি করা পণ্যে ১৯ শতাংশ করারোপ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, নতুন এ শুল্ক বড় চুক্তির অংশ। এ চুক্তির আওতায় ফিলিপাইন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করবে এবং উভয় দেশের মধ্যে সামরিকভাবে সহযোগিতা থাকবে।খবর-বিবিসি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘ফিলিপাইন প্রেসিডেন্টের সফর ভালো হয়েছে। আমরা এর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করেছি।’ তবে এ তথাকথিত চুক্তি নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে এ পরিকল্পনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। কিন্তু বিষয়টি হলো গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন, সেখানে ফিলিপাইনের শুল্ক ছিল ১৭ শতাংশ। এবার ট্রাম্প বললেন ১৯ শতাংশের কথা, র্আৎ ফিলিপাইনের শুল্ক আরও বাড়ছে।
ট্রাম্প বলেছেন, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তিনি যেটা করতে চান, সেটা হলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অবিচার হয়, এমন কোনো নীতিমালা যেন বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলো গ্রহণ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে শেগুলোকে বাধ্য করা। ২ এপ্রিল ট্রাম্প বিশ্বের ৫৭টি দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। পরে ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ভিত্তি শুল্ক আরোপ করেন। ৯ জুলাই সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প তা আবার ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেন।
এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চলছে। যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি হবে না, তাদের আলাদা করে চিঠি পাঠানো শুরু করেছেন ট্রাম্প। ইতিমধ্যে ২২টি দেশকে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এসব চুক্তিতে উচ্চ শুল্ক বহাল আছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এখনো অমীমাংসিত আছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্প যখন ১ আগস্ট থেকে আরও এক ফা উচ্চ শুল্কের হুমকি দিচ্ছেন, তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারদের অবস্থান অনিশ্চিত। চুক্তির আশা ক্ষীণ হয়ে আসায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।
মঙ্গলবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেন, ‘জটিল আলোচনা’ চলছে, তবে ট্রাম্পের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি অন্টারিওতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখা যাক কী হয়। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য বহুস্তরিক, সময়ের সঙ্গে বদলাচ্ছেৃ, তবে এ কথা পরিষ্কার, কানাডা সরকার খারাপ চুক্তি মেনে নেবে না। চুক্তি করাটাই একমাত্র লক্ষ্য নয়।’
ফিলিপাইন তুলনামূলকভাবে ছোট বাণিজ্য অংশীদার। গত বছর দেশটি প্রায় ১৪ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছিল। এর মধ্যে ছিল গাড়ির যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, বস্ত্র ও নারকেল তেল।
ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোও ক্ষতির মুখে পড়ছে। মঙ্গলবার জেনারেল মোটরস জানায়, নতুন শুল্কের কারণে তিন মাসে তাদের ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এর আগে জিপ গাড়ির কোম্পানি স্টেলান্টিস জানায়, শুল্কের কারণে প্রায় ৩৫ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তির আওতায় জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন বা ৫৫ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি জাপানি বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য প্রবেশাধিকার পাবে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী জাপান ১৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দিতেও সম্মত হয়েছে।