শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েলের পদত্যাগের পূর্ববর্তী দাবি থেকে সরে এসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবার বলছে, ফেড প্রধান স্কট বেসেন্ট পদত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। খবর- সিনহুয়া।
গত মঙ্গলবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স বিজনেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি ফেড চেয়ারম্যান পাওয়েলকে খুব ভালোভাবে চিনি। এমন কিছু নেই যার কারণে আমি বলতে পারি যে, পাওয়েলের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। তিনি একজন ভালো জনসেবক।’
বেসেন্ট আরও বলেন, ‘ফেডের চেয়ারম্যান পদে পাওয়েলের মেয়াদ আগামী মে মাসে শেষ হচ্ছে। যদি তিনি সে পর্যন্ত থাকতে চান, তাহলে তা হওয়া উচিত। যদি তিনি তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করতে চান, তাহলে আমার মনে হয় তার সেটি করা উচিত।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাওয়ালকে বরখাস্তের হুমকি দেয়ার পর, অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্য এলো। সুদের হার না কমানোর অভিযোগ তুলে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ফেড প্রধানের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। তবে বেসেন্ট একই দিনে ফেডের কার্যক্রম পর্যালোচনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ফেড যা কিছু করেছে তার সবকিছুতেই ব্যয় বেড়েছে। যখন আপনার তদারকি নেই, তখন এটিই ঘটে।’
ফেডের সদর দপ্তরে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সংস্কার প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করেছে হোয়াইট হাউজ।
গতকাল মঙ্গলবারও ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, পাওয়েল সুদের হার খুব বেশি রেখেছেন। তিনি হুমকি দেন, খুব শিগগিরই পাওয়েলকে তার পদ থেকে সরে যেতে হবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘ফেড চেয়ারম্যান আর বেশি দিন থাকবেন না। তিনি ভালো কাজ করছেন না এবং তিনি কেবল অল্প সময়ের জন্য থাকবেন, খুব বেশি দিন থাকবেন না।’
আগামী সপ্তাহে, সুদের হার নির্ধারণকারী ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি বৈঠকে বসবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি সুদের বর্তমান হার বজায় রাখবে।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ড্যারেল ওয়েস্ট সিনহুয়াকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন বুঝতে পারছে যে, তারা আগামী কয়েক মাসের জন্য পাওয়েলকে সহজেই সরাতে পারবেন না। কিন্তু তার মেয়াদ আগামী বসন্তে শেষ হবে এবং ট্রাম্প সেই তারিখের অনেক আগেই তার বিকল্পের ঘোষণা দিতে পারেন।’
ওয়েস্ট বলেন, ‘তাই চিন্তাভাবনা হলো তারা পাওয়েলকে দুর্বল করে দিতে পারে এবং তার মেয়াদের শেষ মাসগুলোতে আরো চাপে রাখতে পারে।’
সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড পলিসি রিসার্চের একজন সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ডিন বেকারের মতে, পাওয়েলকে বরখাস্ত করার মতো সিদ্ধান্তে যাবেন না ট্রাম্প। এতে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যরা আশঙ্কা করতে পারে যে, ট্রাম্প তাদের বরখাস্ত করতে চলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ফেডের মতো স্বাধীন সংস্থার বোর্ড সদস্যদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরানো যায় শুধুমাত্র গুরুতর কারণ দেখাতে পারলে। ১৯৩৫ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি ঐতিহাসিক রায়ে এ কথা স্পষ্ট বলা আছে।
ট্রাম্প অতীতেও বিভিন্ন স্বশাসিত সংস্থার প্রধানদের বা শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণের চেষ্টা করেছেন, যার অনেকগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে।