শেয়ার বিজ ডেস্ক : বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, কেউ রুখে দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করে শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্র থেমে নেই। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় চট্রগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) রিং রোড মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গতকাল শক্রবার বিকালে তিনি এসব কথা বলেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ’২৪-এর গণ-আন্দোলনে শহিদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এক বছর আগে যে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এক বছর পর এসে বলতে পারি সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই। আজকের দিনে একটি মসজিদ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি, যা সিডিএর অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ।
মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সিটি করপোরেশন ও সিডিএর কর্মকর্তারা।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পতেঙ্গা আউটার রিং রোড এলাকায় দীর্ঘদিন কোনো মসজিদ ছিল না। আজ এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো। এখানে উপস্থিত আমরা সবাই আল্লাহর ঘর নির্মাণের শরিক হলাম।’ তিনি মসজিদের পাশে একটি পার্ক নির্মাণের আহ্বান জানান।
দুই তলাবিশিষ্ট এ মসজিদের মোট আয়তন হবে ৪৪ হাজার ১৯৯ বর্গফুট। এই মসজিদে ১ হাজার ৯১৮ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এই মসজিদে নারীদের জন্য নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মামুন।
এর আগে সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় জুলাই স্মৃতি উদ্যানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের আমাদের সারাজীবন মনে রাখতে হবে। তাদের অবদানের কারণেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে এবং এরপর যারাই সরকারে আসুক, তাদেরও এটি স্বীকার করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এই পার্কটি জুলাই শহিদদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তাই এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এর জন্য একটি নকশা তৈরি করে অতি শিগগিরই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে, যাতে শহিদদের স্মৃতি অম্লান থাকে।
স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ নিয়ে আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন নিয়ে কিছু আপত্তি থাকলেও তা বড় কিছু নয়। আপত্তিগুলো সমাধান করে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছি। দু-তিনটি ভিন্নমত ছিল। সেগুলো সমন্বয় করে এক জায়গায় আনার চেষ্টা চলছে।
আদিলুর রহমান খান জানান, প্রথম ধাপে ৮৩৪ জনের বেশি শহিদ পরিবার সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহায়তা পেয়েছে। ওয়ারিশান-সম্পর্কিত সমস্যাগুলো বাদ দিয়ে আহতদের স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফরেনসিক-সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া বাকি সব বিষয় শেষ হয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।