Print Date & Time : 27 July 2025 Sunday 12:27 pm

বন্দরে নেই ট্রাক টার্মিনাল যানজটে চরম ভোগান্তি

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম : প্রতিদিন চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ড ও বেসরকারি ডিপো থেকে আমদানি ও রপ্তানির ৮ হাজার পণ্যবাহী লরি, কাভার্ড ভ্যান, ট্রেলরের কারণে অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হয়ে। এতে অফিসগামী চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, সাধারণ পেশাজীবী, রোগীসহ বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গার কয়েক লাখ বাসিন্দা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অথচ বন্দরের একটি ট্রাক টার্মিনাল থাকলে এলাকাবাসীর কর্মঘণ্টা নষ্ট ও জ্বালানি সম্পদের অপচয় হতো না।

বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গার স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ সম্পাদিত হয়। প্রতিদিন এসব পণ্য বন্দর ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে আনা ও নেয়ায় আট হাজারেরও বেশি ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, ট্রেলর চলাচল করে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী কয়েক হাজার ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে। ফলে বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা এলাকায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অসহনীয় যানজটের শিকার হোন স্থানীয় এলাকাবাসী। আর বন্দর ইপিজেড যানজট শুধু বন্দর ইপিজেড ও পতেঙ্গার সমস্যা নয়, এ সমস্যা এখন জাতীয় সমস্যার রূপধারণ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ চট্টগ্রাম বন্দর, শিল্পাঞ্চল ইপিজেড, পতেঙ্গা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি তেল সেক্টরসহ বেশ কিছু সরকারি স্থাপনা এ অঞ্চলে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে। নিত্যদিনের তীব্র যানজটের কারণে একদিকে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রবাব পড়ছে এবং অত্র অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যাংকার নিজাম উদ্দিন মামুন বলেন, আমাদের এলাকা দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর আছে। আমাদের জন্য গর্বের। এ বন্দরের কারণে দৈনিক ১৩ থেকে ১৪ হাজার পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি চালাচল করে। বন্দর থেকে পণ্যবাহী গাড়ির এলোমেলো অবস্থানের কারণ স্থানীয় লোকজন সময়মতো স্কুল, কলেজ, অফিস ও হাসপাতালে যাতায়াত করতে পারেন না। অসহনীয় যানজটের ঘণ্টার পর ঘণ্টার সময় নষ্ট হয়। এমনকি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি বা রোগীরা সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হোন। অথচ বন্দর, সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পুলিশ বিভাগ সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সড়ক ও যানবাহন যানজট মুক্ত করতে পারে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী হানিফ সওদাগর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ চট্টগ্রাম বন্দর, শিল্পাঞ্চল ইপিজেড, পতেঙ্গা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি তেল সেক্টরসহ বেশ কিছু সরকারি স্থাপনা এ অঞ্চলে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে। কিন্তু নিত্যদিনের তীব্র যানজটের কারণে একদিকে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রবাব পড়ছে এবং অত্র অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারকে কাজ করতে হবে।

প্রাইমমুভার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বলেন, বন্দর ও ডিপো থেকে পণ্য আনা ও নেয়ার জন্য হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। পণ্য খালাস আরও আধুনিকায়ন করা হলে যানজট থাকবে না। পাশাপাশি অবশ্যই টার্মিনাল তৈরি করতে হবে। তা না হলে যানজট মুক্ত হবে না।

সিএমপি ট্রাফিক বিভাগের টিআই শহিদুল আলম বলেন, যানজটের এ সমস্যা দূরীকরণে বন্দরে গাড়ি প্রবেশের গেট বৃদ্ধি, গেটে সার্ভার সব সময় সচল রাখাসহ নানা কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জরুরি।

অপরদিকে বন্দর কর্মকর্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালের হলে তখন একটি সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে। এই সংযোগ সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কনটেইনার চলে যাবে বে-টার্মিনাল এরিয়াতে। বে-টার্মিনালের সঙ্গে ৮ হাজার ট্রাক থাকতে পারবে এ রকম ট্রাক টার্মিনাল হবে। তখন সব ট্রাক বে-টার্মিনাল পর্যন্ত আসবে, ওখানে সব পণ্য খালাস করবে। আবার ওখান থেকে পণ্য নিয়ে চলে যাবে। এটি বাস্তবায়িত হলে কোন ট্রাককে নগরীতে ঢুকতে হবে না, আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা নিচ্ছি, কাজ করে যাচ্ছি।