Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 1:04 pm

বাইপাস সড়কের কাজ থেমে থাকায় কুড়িগ্রাম শহরে যানজট

আমানুর রহমান খোকন, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম শহরে ব্যাপক যানজটে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমেছে। সাধারণ মানুষ তাকিয়ে আছে কবে শুরু করা হবে বাইপাস সড়কের কাজ। তবে অনেক আগেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও কাজের কার্যাদেশ না পাওয়ায় বাইপাস সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদার।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশের প্রধানসড়ক শাপলা চত্বর থেকে আরকে সড়কের ত্রি-মোহনী বাজার পর্যন্ত, শাপলা চত্বর থেকে কেসি সড়কের ভোকেশনাল মোড় ও শাপলা চত্বর থেকে কেভি সড়কের বীর প্রতীক তারামন বিবির মোড় পর্যন্ত ব্যাপক যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে সঠিক সময়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। যানজটে পড়ে মুমূর্ষু রোগীরা চিকিৎসার আগেই রাস্তায় মারা যাচ্ছেন। কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পেয়ে আর্কি ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া শহরে অবস্থিত কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বর্ডার গার্ড স্কুল, পুলিশ লাইন্স স্কুল, বেসরকারি মজিদা আর্দশ ডিগ্রি কলেজ, কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রিভার ভিউ হাই স্কুল, আলিয়া কামিল মাদরাসা, ভোকেশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পলিটেকনিকেল কলেজ, নীলারাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থাকায় শির্ক্ষাীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা যানজটের কারণে সঠিক সময় শিক্ষাপ

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী লাবণ্য, আফিয়া ও সাথী বলেন, শহরে অনেক যানজট থাকায় সময়মতো আমরা কেউ স্কুলে যেতে পারি না। অনেকেই কয়েকবার সড়ক দুর্ঘটনার পড়েছি। বাইপাস সড়ক হলে শহরের যানজট কমে যাবে, এতে শিক্ষার পরিবেশ অনেক ভালো হবে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রোগীর স্বজন আব্দুল মতিন, রাজু মিয়া ও এরশাদুল খান বলেন, শহরে এত বেশি যানজট থাকে যে আমরা জরুরি রোগী সময়মতো হাসপাতালে আনতে পারি না। বাইপাস সড়ক হলে রোগীকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারব। তখন আর রাস্তায় মরতে হবে না।

আবদুল ওয়াব খকার ও কমল চন্দ্র দাস বলেন, আদালতে মামলার তারিখ ছিল যানজটে পড়ে সময়মতো আদালতে হাজির হতে না পেয়ে জরিমানা দিতে হলো। বাইপাস সড়ক থাকলে আমাদের এই জরিমানার টাকা আদালতে দিতে হতো না।

কুড়িগ্রাম রিভার ভিউ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন, বাইপাস সড়ক না থাকায় মূল শহরে অনেক যানজট সৃষ্টি হয়। জেলার সব গুরুত্বপূর্ণ অফিস, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল শহরের ভেতরেই। বড় বড় যানবাহন শহরের ভেতরে ঢুকলেই যানজটের সঙ্গে অনেকের প্রাণও চলে যায়। বাইপাস সড়ক হলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগ জানায়, শহরের যানজট এড়াতে কেভি সড়কের বীর প্রতীক তারামন বিবির মোড় থেকে আরকে সড়কের দাশেরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বাইপাস সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জমি অধিগ্রহণের তিনটি মামলার দুটি শেষ করা হয়েছে। জমির মালিকরা তাদের সম্পদের ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। অপর মামলাটিও নিষ্পত্তির কার্যাদেশ পেলে ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুড়িগ্রাম শহরের বাইপাস সড়কের কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের এসডি মেহেদী হাসান বলেন, বাইপাস সড়কের তিনটি এলএ কেসের মধ্যে দুটি শেষ হয়েছে। আর একটিও শেষের দিকে। খুব তাড়াতাড়ি বাইবাস সড়কের কাজ শুরু করা হবে।

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, কুড়িগ্রাম শহরের যানজট কমাতে বাইপাস সড়ক অতি জরুরি। আমরা এরই মধ্যে টেন্ডার করেছি। অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলেই কার্যাশে দিয়ে বাইপাস সড়কের কাজ শুরু করব।