নিজস্ব প্রতিবেদক : দুদকের করা এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা শুনানি শেষে গতকাল সোমবার তাকে গ্রেপ্তার দেখান জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া।
গতকাল শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৭ কোটি টাকার জমি অতি মূল্যায়ন করে এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে
মামলা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ না করে এবং মর্টগেজ সম্পত্তি সরেজমিন পরিদর্শন বা মূল্য যাচাই না করেই অস্বাভাবিক মূল্যায়নের মাধ্যমে সদ্য নিবন্ধিত একটি কোম্পানির (শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড) নামে বন্ডের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। এই অর্থ প্রথমে চলতি হিসাবে জমা হয়। এরপর ২০০ কোটি টাকার এফডিআর করা হয় এবং বাকি ৮০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয় বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে। সেখান থেকে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে নগদ উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং করা হয়।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত ২০২০ সালের ১৭ মে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। পুনর্নিয়োগ পেয়ে গত বছরের ১৬ মে তিনি আবার বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন শিবলী রুবাইয়াত। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে ফিরে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিবলী রুবাইয়াত সশরীর না গিয়ে এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে বিভাগে যোগদানপত্র জমা দেন। তবে তিনি ক্লাস নেন না।
শিবলী রুবাইয়াতকে শিক্ষার্থীরা বর্জন করায় তিনি ক্লাস নিতে পারছিলেন না। তিনি আড়াই মাসের ছুটি নিয়েছিলেন, যা গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। ছুটি শেষ হওয়ার পর তিনি বিভাগে যোগ দেননি।
শিবলী রুবাইয়াতের বিদেশযাত্রায় গত ৯ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নিষেধাজ্ঞা দেন।

Discussion about this post