নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের তিনদফা দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং পলিটেকনিক শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ, সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও ছাত্র প্রতিনিধিদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৌ. মো. আখেরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইডিইবি অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌ. মো. কবীর হোসেন। সঞ্চালনা করেন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব প্রকৌ. মো. ইমাম উদ্দিন।
সভায় বক্তারা বলেন, সরকার পলিটেকনিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আকৃষ্টকরণ, জাতীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকল্পে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সনদধারীদের জন্য ইউনিফাইড পদবী উপ-সহকারী প্রকৌশলী নির্ধারণ করে। যাদের মূল কাজ ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সরকারের বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা সেই কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। ১০ম গ্রেডভুক্ত এই পদে গবেষণা, উদ্ভাবন, নকশা প্রণয়নে পারদর্শী বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা কেন প্রবেশ করতে চাচ্ছেন, সেটি বোধগম্য নয়। ডিগ্রি প্রকৌশলীদের দাবি মেনে নেওয়া হলে সরকারি ও বেসরকারি প্রায় পাঁচ শতাধিক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বন্ধ হয়ে যাবে বলে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। অধিকন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমূহ হতে গবেষণার জন্য হাজার হাজার ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করা অপচয় হবে। যেটি জাতির জন্য আত্মঘাতির শামিল।
শিক্ষক প্রতিনিধিরা বলেন, চাকরি জীবনে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক কর্মচারির পদোন্নতিপ্রাপ্তি সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। সঙ্গতকারণে সরকার ১৯৭৮ সালের প্রজ্ঞাপনে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হতে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি ৩৩ শতাংশ নির্ধারণ করে। পরবর্তীতে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পদ সৃষ্টির কারণে পদোন্নতি ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এরপরও ন্যূনতম পদোন্নতির এই বিধান বাতিলের যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। তারা বলেন, প্রকৌশলী পদবী ব্যবহারের বিষয়টি বিএনবিসি-২০২০ এ স্পষ্ট করা হয়েছে। অথচ, এসব মীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়াররা নতুনভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে; যা প্রত্যাশিত নয়। শিক্ষক প্রতিনিধিরা প্রকৌশল শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের স্থিতিশীলতার স্বার্থে এ ধরনের অযৌক্তিক দাবি থেকে সরে আসার জন্য আন্দোলনরত বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীসহ পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।