শেয়ার বিজ ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে দেশের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করতে দেব না। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে জনগণের পক্ষে কাজ করবে, কোনো দলের অনুসারী হবে না। আমলাতন্ত্র-প্রশাসন কোনো দলের অনুসারী হবে না। তাদের প্রমোশন সরকারি দলের কোনো নেতার ওপর নির্ভর করবে না।
নাহিদ বলেছেন, আমরা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চাই। বিচার ও সংস্কার ছাড়া বাংলার জনগণ নির্বাচন মেনে নেবে না। বিচার ও সংস্কার ছাড়া যারা নির্বাচন চায়, তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকালে যশোর শহরের জিরো পয়েন্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে দেশের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করতে দেব না। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে জনগণের পক্ষে কাজ করবে, কোনো দলের অনুসারী হবে না। আমলাতন্ত্র-প্রশাসন কোনো দলের অনুসারী হবে না। তাদের প্রমোশন সরকারি দলের কোনো নেতার ওপর নির্ভর করবে না।
তিনি আরো বলেন, কোন দুর্নীতিবাজ, দখলবাজকে ভয় পাবেন না। একটি রাজনৈতিক দল দাবি করে কোটি কোটি মানুষের দল নাকি তাদের। এই কোটি কোটি, লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের দেখায়েন না। আমরা ফ্যাসিবাদের আমলে দেখেছি কত মানুষ ছিল তাদের। সেই মানুষেরা কত আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ১০জন দাঁড়িয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনার ১০ জন, ২০ জন, ১০০ জন মানুষ নিয়েই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। লাখ-লাখ মানুষ আবাবিল পাখির মত আমাদের সঙ্গে রাজপথে দাঁড়িয়েছিল। তাই মানুষের হিসাব আমাদের দেখায়েন না। যদি নৈতিকতার সঙ্গে থাকেন, ইনসাফের সঙ্গে থাকেন, তাহলে একজন মানুষ লক্ষ মানুষের সমান শক্তিশালী হয়ে যায়। আমরা সেই একজন মানুষ হতে চাই।
দায় ও দরদের ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গড়ার আকাঙ্খা জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ইনসাফের পক্ষে দাঁড়াবে, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবে, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তেমন রাষ্ট্র চাই। যেখানে সমাজের সব ধরণের মানুষের সমান হক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
যশোর জেলার দীর্ঘদিনের সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, যশোরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ চালু হয়নি। সেখানে আইসিইউ চালু হয়নি। যশোরের মানুষকে খুলনায় যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। আমরা চাই যশোরের মানুষ যশোরেই সেবা ও শিক্ষা পাবে। আমরা ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতার কথা জানি। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। সেই সমস্যার কথা জানি। এই সমস্যা দূর করার দায়িত্ব নিতে হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের। আমরা বেনাপোলের দুর্নীতি, মাদক কারবারের কথা জানি। দুর্নীতি মাদকের বিরুদ্ধে তরুণ ছাত্র-জনতাকে দাঁড়াতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যেমন আপনার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তেমনি যশোরসহ সারা দেশের মানুষের সমস্যায় পাশে দাঁড়াতে হবে।
দলের মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তর অঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক হাসানত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য খালিদ সাইফুল্লাহ জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা।
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে যশোর শহরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এনসিপি যশোর জেলা শাখা। সভায় বক্তাব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুম ও ডা. তাসনিম জারা এবং অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরআর/

Discussion about this post