শেয়ার বিজ ডেস্ক : ইউক্রেনীয় হামলার কারণে রাশিয়ার নভোরোসিস্ক বন্দর দুদিন বন্ধ থাকার পর আবার তেল রপ্তানি শুরু হওয়ায় বিশ্ববাজারে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।
গত সোমবার ১২টা ৫৪ মিনিটে (গ্রিনিচ মান সময়) আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৫ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ দশমিক ৩৪ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আমেরিকান বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সেস ইন্টারমিডিয়েট বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮ সেন্ট কমে ৬০ দশমিক ০১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
মূলত, গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের হামলার জেরে নোভোরোসিস্ক এবং পার্শ্ববর্তী ক্যাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়াম টার্মিনালে তেল রপ্তানি স্থগিত করে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ, যা বিশ্বব্যাপী প্রায় দুই শতাংশ সরবরাহ করে থাকে। এতে গত শুক্রবার দুই শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায় তেলের দাম।
এদিকে ইউক্রেনের হামলার কারণে রাশিয়ার জ্বালানি তেল অবকাঠামোর ওপর ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে। শনিবার ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার রিয়াজান তেল শোধনাগার ও সামারা অঞ্চলের নোভোকুইবিশেভস্ক তেল শোধনাগারে হামলা চালিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা রাশিয়ার তেল সরবরাহ ও বাণিজ্যপ্রবাহের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করছেন। কারণ রাশিয়ান অন্যতম প্রধান জ্বালানি তেল কোম্পানি লুকোয়েল নতুন সমস্যায় পড়েছে। কারণ রাশিয়ার কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা ছিন্ন করার জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বেঁধে দেয়া সময়সীমা ২১ নভেম্বরে শেষ হচ্ছে এবং সুইস সংস্থা গুনভোরের কাছে কোম্পানিটি বিক্রির পরিকল্পনাও ভেস্তে গেছে।
অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন ও ভারতের রুশ তেল আমদানি কমে গেছে, এতে এশিয়ার জলসীমায় জাহাজগুলোতে সংরক্ষিত জ্বালানি তেলের পরিমাণও দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল মজুত বেড়েছে এবং ভারতীয় রিফাইনারিগুলো রাশিয়ার জ্বালানি তেলের পরিবর্তে এখন মধ্যপ্রাচ্য ও মার্কিন জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে।
গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রিপাবলিকানরা এমন একটি আইন তৈরির জন্য কাজ করছে, যা রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করা যেকোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে এবং ইরানকেও সেই তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপিইসি এবং ওপেক প্লাস ডিসেম্বরে তেল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রতিদিন ১ লাখ ৩৭ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে। সর্বোপরি বাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ যথেষ্ট থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইরানের কর্মকাণ্ড এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ভবিষ্যতের তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
